অবসরের ১৫ ঘণ্টা আগে মৃত্যু শিক্ষকের, ছেলেকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৩ মার্চ ২০২৫
অবসরগ্রহণের ১৫ ঘণ্টা আগে প্রধান শিক্ষক বাবার মৃত্যু হয়েছিল। আর সেই পরিস্থিতিতে অনুকম্পাজনিত কারণে ছেলেকে বাবার চাকরি প্রদানের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ওই প্রধান শিক্ষক যখন শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৫৯ বছর ১১ মাস ২৯ দিন। অবসরের সীমা তথা ৬০ বছর পূর্ণ হতে ১৫ ঘণ্টা বাকি ছিল। অর্থাৎ নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি চাকুরে থাকার সময়ই প্রধান শিক্ষক প্রয়াত হয়েছেন। তাই অনুকম্পাজনিত কারণে তাঁর ছেলে চাকরি পাওয়ার যোগ্য বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট। সেই পরিস্থিতিতে পুরো বিষয়টি নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে। তিন সপ্তাহের মধ্যে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে নিয়োগের সুপারিশপত্র দিতে হবে বলে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আর হাইকোর্ট সেই নির্দেশ দিয়েছে প্রধান শিক্ষকের বড় ছেলে মনিকুল হোসেনের আবেদনের প্রেক্ষিতে। তাঁর বাবা মহম্মদ কোরবান হোসেন ২০০২ সালে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক হয়েছিলেন। প্রধান শিক্ষক পদে থেকেই ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি তাঁর অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অবসরগ্রহণের ঠিক আগেরদিন সকাল ৮ টা ১৩ মিনিটে মৃত্যু হয়।
সেই পরিস্থিতিতে অনুকম্পাজনিত কারণে বাবার চাকরি চেয়ে এসএসসির কাছে আবেদন করেন মনিকুল। যদিও তিনি অভিযোগ করেন যে সেই আবেদনে কমিশন সাড়া দেয়নি। তারপরই হাইকোর্টে মামলা করেন প্রধান শিক্ষকের ছেলে। তাঁর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম দাবি করেন, কোরবানের বয়স ৬০ পূর্ণ হয়নি। তাই অনুকম্পাজনিত কারণে ছেলের চাকরি পাওয়ার উচিত।
যদিও কমিশনের তরফে সওয়াল করা হয় যে যখন প্রধান শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে, তখন তাঁর বয়স প্রায় ৬০ হয়ে গিয়েছিল। খাতায়কলমে সেই সীমা পূরণ হতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি ছিল। তাই তাঁর বয়স ৬০ হয়ে গিয়েছে বলে বিবেচনা করা উচিত। আর স্বভাবতই পরিবারের অপর কোনও সদস্যকে চাকরি দেওয়া যায় না বলে কমিশনের তরফে জানানো হয়। পালটা মামলাকারীর আইনজীবী সওয়াল করেন যে প্রধান শিক্ষকের বয়স মোটেও ৬০ হয়নি। তাই মনিকুলকে চাকরি দেওয়া উচিত বলে দাবি করেন ফিরদৌস।
আর সেই সওয়াল-জবাবের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট জানিয়েছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রধান শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। আর মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ৬০ পূর্ণ হয়নি। সেই নিরিখে অনুকম্পাজনিত কারণে তাঁর পরিবারের সদস্যের চাকরি পাওয়ার অধিকার আছে জানিয়েছেন বিচারপতি ভট্টাচার্য। সেইমতো কমিশন এবং রাজ্য সরকারকে পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন।