• দেড়ঘণ্টার নিখুঁত অপারেশনে ট্যাংরার দে পরিবারের দুই বধূ ও মেয়েকে ‘খুন’ প্রসূনের, দাবি দাদা প্রণয়ের
    প্রতিদিন | ০৩ মার্চ ২০২৫
  • অর্ণব আইচ: বসেছিলাম একতলার সিঁড়িতে। ঘণ্টা দেড়েক পর রক্তমাখা জামা পরে ভাই এসে বলল, “কাজ শেষ।” হাসপাতালের বেডে শুয়ে এমনই রহস্য দাবি ট্যাংরার অভিজাত
    দে পরিবারের বড় ছেলে প্রণয় দে-র। তা থেকেই পুলিশ অনেকটাই নিশ্চিত যে, বাড়ির দুই স্ত্রী, কিশোরী মেয়েকে খুন ও কিশোর নাবালককে খুনের চেষ্টার জন্য দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছিল বাড়ির ছোট ছেলে প্রসূন দে-র। তদন্তে পুলিশের ধারণা, প্রসূন শিরা কাটার আগে সোশ্যাল মিডিয়া দেখেন। কীভাবে ছুরি দিয়ে কাটতে হয়, রীতিমতো তা শিখে নেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর পর অপটু হাতে খুন করেন তিনজনকে। এই ব্যাপারে আরও নিশ্চিত হতে প্রণয় ও প্রসূন দু’জনেরই মোবাইল পরীক্ষা করছে পুলিশ। তাঁদের মোবাইল ফরেনসিকেও পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশের সূত্র।

    যদিও পুলিশের কাছে দু’দিন আগেই প্রসূন দে দাবি করেছিলেন যে, তিনি দুই স্ত্রীকে হাতের শিরা ও গলা কেটে খুন করলেও নিজের মেয়ে প্রিয়ংবদাকে খুন করেননি। সেই ক্ষেত্রে প্রিয়ংবদাকে প্রসূনের দাদা প্রণয় নাক ও মুখে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করেছেন কি না, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। যদিও প্রণয় সরাসরি পুলিশের কাছে দাবি জানিয়েছেন, তাঁর ভাই-ই দুই স্ত্রী ও ভাইঝিকে খুন করে ‘মুক্তি দিয়েছেন।’ সেই ক্ষেত্রে দু’জনের কথায় রয়েছে অসঙ্গতি। এদিকে, এই সপ্তাহেই প্রণয় ও প্রসূন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই দু’জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করবে। প্রণয়ের নাবালক ছেলের দায়িত্ব যাতে কোনও দম্পতি নেন, সেই চেষ্টা করছে শিশু সুরক্ষা কমিশনও।

    এদিকে, পুলিশের জেরার মুখে প্রণয় দে জানান, তিনি ভাই প্রসূনকে বলেন, পরিবারের প্রত্যেকে বেঁচে রয়েছেন, তাঁদের মুক্তি দিতে হবে। প্রসূন তখন তিনতলা থেকে কাগজ কাটার ছুরি নিয়ে আসেন। প্রসূনই প্রণয়কে বলেন, তিনি পরিবারের অন্যদের হাতের শিরা কেটে ‘মুক্তি দেওয়ার’ ব্যবস্থা করবেন। এর পর প্রসূন দোতলায় উঠে যান। প্রণয় তখন একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়িতে বসে ছিলেন। প্রণয়ের দাবি, প্রায় দেড় ঘণ্টা তিনি একইভাবে বসে থাকার পর রক্তমাখা জামা পরে তাঁর ভাই এসে বলেন, “কাজ শেষ।” হাতে তাঁর রক্তমাখা ছুরি। পুলিশের মতে, প্রসূন পেশাদার নন বলেই তাঁর দেড়ঘণ্টা সময় লেগেছিল। যদিও প্রসূনের দাবি অনুযায়ী, দুই স্ত্রী প্রথমে নিজেরাই হাতের শিরা কাটেন। তাঁদের মৃত্যু না হওয়ায় প্রসূন তাঁদের মরতে ‘সাহায্য করেছিলেন।’ পুলিশের কাছে বড় ছেলে প্রণয়ের দাবি, ভাই প্রসূন তাঁর কাছেই এসে বসে জানান, বাড়ির দুই স্ত্রী সুদেষ্ণ ও রোমির শিরা, গলা কেটে, কিশোরী এবং কিশোরকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন। কিছুক্ষণ পর প্রণয় প্রসূনকে নিয়ে দোতলায় উঠে দেখেন, তিনটি ঘরে পড়ে রয়েছে সুদেষ্ণা ও রোমি এবং প্রসূনের মেয়ের দেহ। নাবালক বেঁচে যায়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)