এই সময়, সোনারপুর: ইন্ডোর স্টেডিয়ামের কর্মীসভা থেকে আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের নীল নকশা তৈরি করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই শুরু হয়েছে তৎপরতা। নতুন ভাবে সংগঠনকে শক্তিশালী করে তোলার সঙ্গে জনসংযোগ জোরালো করার উপরে জোর দিলেন সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলী মৈত্র। নিলেন অভিনব উদ্যোগ।
কী সেই উদ্যোগ? বিধায়ক নিজের কাজকর্মের মূল্যায়ন করতে যাচ্ছেন জনতার দরবারে। তাঁর কাজকর্মে কতটা ঘাটতি ছিল, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মতামত চাইছেন। কারও অভিযোগ যদি থাকে, তা লিখিত আকারে জমা দিতে হবে একটি অভিযোগ বাক্সে। কেউ যদি আবার কোনও ধরনের পরামর্শও দিতে চান, তাঁকেও স্বাগত জানাচ্ছেন বিধায়ক। সোনারপুর পুরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে এই ধরনের অভিযোগ বাক্স বসানো হবে। সমস্ত ধরনের অভিযোগ অথবা পরামর্শ নিয়ে পরে পর্যালোচনা হবে।
শনিবার তৃণমূলের কর্মীসভায় এমনই প্রস্তাব দিয়েছেন বিধায়ক লাভলি। শুধু তাই নয়, বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত তাঁর এলাকায় কী ধরনের প্রচার এবং জনসংযোগের কাজ হবে, তারও রূপরেখা ঠিক করে দেন তিনি। লাভলি বলেছেন, ‘আপনার বিধায়ক আপনার পাশে’ নামে একটি অভিযোগ বক্স বসানো হবে প্রত্যেক ওয়ার্ডে। পঞ্চায়েত থেকে ওয়ার্ড অফিস, সমস্ত জায়গায় এই বিশেষ বাক্স বসানো থাকবে।
সাধারণ মানুষ তাঁদের যাবতীয় অনুযোগ অথবা সুচিন্তিত পরামর্শ লিখিত ভাবে জমা দিতে পারবেন সেই বাক্সে। আমার নামেও যদি কোনও ধরনের অভিযোগ থাকে, তা–ও জানাতে দ্বিধাবোধ করবেন না। বিষয়গুলি জানলে আমার পক্ষেও নিজেকে শুধরে নিয়ে আরও বেশি উন্নয়নমূলক কাজ করা সহজ হবে। ফলে জনসংযোগের উপরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবেই।’ এ ছাড়াও ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনি করার জন্য বুথভিত্তিক কমিটিও তৈরি করা হবে।
শনিবারের কর্মীসভায় উপস্থিত ছিলেন যাদবপুর লোকসভার সাংসদ সায়নী ঘোষ–ও। গত লোক সভা নির্বাচনে সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা থেকে তৃণমূল খুব কম ব্যবধান পেয়েছিল। তা নিয়ে কর্মীদের সামনে হতাশা প্রকাশ করেন সাংসদ। তিনি বলেন, ‘সোনারপুর দক্ষিণ থেকে অনেক বেশি ভোট আশা করেছিলাম। হয়তো আমার তরফে কিছু খামতি ছিল, যে কারণে প্রত্যাশিত ভোট পাইনি। সেই ভুলত্রুটি শুধরে আরও এই বিধানসভা থেকে দল যাতে আরও বেশি ভোট পায়, তার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। ভোটারদের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করার উপরে বিশেষ জোর দিতেই হবে।’ শহুরে ভোটারদের কী করে তৃণমূলের দিকে আরও বেশিমাত্রায় টেনে আনা সম্ভব, তার জন্যও রণকৌশল তৈরি করা হবে।
নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে দু’টি কর্মসূচি প্রসঙ্গে লাভলি বলেন, ‘সারা বছর বিধায়ক–ই মানুষের পাশে থাকেন। তবে এই কর্মসূচিতে প্রশাসনিক আধিকারিকদেরও রাখা হবে।। প্রতি সপ্তাহে বুথে ক্যাম্প করা হবে এবং সেখানে মানুষ কোনও অসুবিধা বা সমস্যার কথা জানাতে এলে তা মন দিয়ে শুনে আধিকারিকদের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। এ ছাড়াও এলাকার বাসিন্দারা নিজেদের দাবিদাওয়া অথবা অভিযোগ লিখিত আকারে অভিযোগ বক্সে জমা দিতে পারবেন। আমার তরফেও কোনও ভুল হলে তা–ও জানাতে দেরি করবেন না। এতে উভয়পক্ষেরই সুবিধা হবে।’