পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর গঙ্গাসাগরকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করতে মুড়িগঙ্গার উপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর জন্য রাজ্য বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পাশাপাশি, ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণের জন্য অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ এবং রাস্তার দুই পাশে ইমারতি দ্রব্য রাখার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র ও তীর্থস্থান গঙ্গাসাগরে যাওয়ার জন্য এখন শুধুমাত্র জলপথের উপর নির্ভর করতে হয়। লট-৮ থেকে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত সংযোগকারী এই সেতু নির্মাণ হয়ে গেলে যাতায়াতে সময় কমবে এবং স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হবে। মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের জন্য প্রশাসনিক স্তরে ডিটেলড প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি হয়েছে।
জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের দুই পাশে থাকা সরকারি জমি দখলমুক্ত করার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। কাকদ্বীপের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে, যেখানে জনগণকে স্বেচ্ছায় দখল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন মাস ধরে প্রতি সপ্তাহে দু’দিন এই প্রচার চলবে। যে সব স্থানে রাস্তার ধারে বালি, স্টোনচিপস এবং অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে, সেগুলো দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ এই নির্দেশ না মানে, তা হলে প্রশাসন আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে বা প্রয়োজন হলে উচ্ছেদ অভিযান চালাবে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষ থেকে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণের কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে নামখানা বিডিও অফিস থেকে বকখালি পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার রাস্তার সম্প্রসারণ করা হবে। বর্তমানে সাত মিটার চওড়া রাস্তা রয়েছে, যা আরও ন’মিটার চওড়া করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হবে।
এ দিকে, সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা জানিয়েছেন যে, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্প সম্পর্কে তিনি এখনও কিছু জানেন না। তবে তিনি মনে করেন, সেতু নির্মাণ এবং জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ হলে সুন্দরবনের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। গঙ্গাসাগরের সঙ্গে সরাসরি সংযোগকারী সেতু এবং জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ হলে পর্যটন, বাণিজ্য ও স্থানীয় অর্থনীতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ দ্রুত ও সহজে যাতায়াতের সুবিধা পাবেন। পাশাপাশি, দুর্যোগ পরিস্থিতিতে দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য চালানোর ক্ষেত্রেও এই উন্নয়নমূলক প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।