• বন দপ্তরের কোয়ার্টারে এক পরিবারের তিনজনের রহস্যমৃত্যু, খুন না আত্মহত্যা? ধোঁয়াশায় পুলিশ...
    আজকাল | ০৩ মার্চ ২০২৫
  • অতীশ সেন, ডুয়ার্স: মাদারিহাটে বন দপ্তরের কোয়ার্টারের মধ্যে এক মাহুতের পরিবারের তিনজনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। পুলিশ সূত্রে খবর, মাদারিহাটের সায়লামন্ডল এলাকার বাসিন্দা বিনোদ ওরাওঁ বন দপ্তরে মাহুতের কাজ করতেন। তাঁর বড় ছেলে বিবেক ওরাওঁ-এর পড়াশোনার জন্য তিনি সপরিবারে মাদারিহাট রেঞ্জ অফিসের কোয়ার্টারে থাকতেন। 

    সোমবার সকালে দেখা যায়, বিনোদের ভাই রবি ওরাওঁ (৩০) আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর মা বেবি ওরাওঁ (৫২) ও বড় ছেলে বিবেক ওরাওঁ (১৩) পাশের ঘরে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তবে তিনজনেই আত্মহত্যা করেছে- নাকি রবি ওরাওঁ তাঁর মা ও বিবেক'কে খুন করে নিজে আত্মহত্যা করেছেন, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে সন্দেহ। ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যেই বন দপ্তরের আধিকারিক ও মাদারিহাট থানার পুলিশ কর্মীরা পৌঁছেছেন।

    জানা গিয়েছে বিনোদের স্ত্রী, মা, দুই ছেলে ও ভাই নিয়ে ছ'জনের সংসার ছিল। তাঁর বড় ছেলে বিবেক মাদারিহাটের একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যমের স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ত। তাঁদের পরিবারে কোনও বিবাদ ও অশান্তি ছিল না বলেই প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে। সোমবার ভোরে বিনোদ ওরাওঁ বনদপ্তরের ডিউটিতে চলে যান৷ এরপরই তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে ভয়াবহ খবর পেয়ে তিনি বাড়ি ছুটে আসেন। দেখা যায়,  ভাই রবি ফাঁসিতে ঝুলছেন। তাঁর মা ও ছেলে মেঝেতে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে রবি আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে অপর দু'জনকে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে। 

    বিনোদ ওরাওঁ জানান, তাঁর বাবা ২০১৪ সালে কর্মরত অবস্থায় মারা গিয়েছিলেন। ফলে বাবার চাকরিটা তাঁর ভাইয়ের হওয়ার কথা ছিল। এর জন্য কয়েকবার তাঁরা কলকাতা পর্যন্তও ছুটেছিলেন। কিন্তু দশ বছর পেরিয়ে গেলেও চাকরি না পেয়ে ভাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ঘটনার রাতে রবি ওরাওঁ তাঁর সমস্ত বইপত্র নিয়ে বাড়ির পেছনে আগুনে জ্বালিয়ে দেন। বিনোদ ভাইকে হাল না ছাড়ার জন্য পরামর্শ দিলেও, তিনি মানসিকভাবে একেবারেই ভেঙে পড়েছিলেন৷ রাতে তাঁরা একসঙ্গে মাছভাত খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)