মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রে পাল্টা কর্মসূচি বিজেপির, তৃণমূলের উপর নজরদারি
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৩ মার্চ ২০২৫
রাজ্যে ‘ভূতুড়ে ভোটার’ ভোটার তালিকায় ঢুকে পড়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের। এমনকী এই ‘ভূতুড়ে ভোটার’ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সেটিং করে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে বাংলায় বলে অভিযোগ করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন দিন আগে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যের ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এই সমস্যার সমাধান করতে কোর কমিটি গড়ে দেন তৃণমূলনেত্রী। এই কোর কমিটি এখন ‘ভূতুড়ে ভোটার’ ধরার কাজ করতে পথে নেমেছে। স্বয়ং মেয়র ফিরহাদ হাকিম মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে সবটা খতিয়ে দেখেছেন। এবার পাল্টা কর্মসূচি নিল দক্ষিণ কলকাতা জেলা বিজেপি। ভবানীপুর থেকেই কর্মসূচি শুরু করছে তারা।
মুখ্যমন্ত্রীর তোলা অভিযোগের পর তড়িঘড়ি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসে ছুটে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তারপর তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তবে নির্বাচন কমিশন মেনে নিয়েছে, একই এপিক নম্বরে দু’জন ভোটার থাকতেই পারে। কিন্তু তাদের ‘ভূতুড়ে ভোটার’ বলা যাবে না। কারণ এপিক নম্বর এক হলেও বিধানসভা কেন্দ্র আলাদা। আর যে সমস্যা আছে সেটা অচিরেই মিটবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা অভিযোগ নির্বাচন কমিশন মেনে নেওয়ায় ফাঁপরে বিজেপি। এখন তৃণমূল কংগ্রেস ‘স্ক্রুটিনি’র কাজ শুরু করেছে। সেই কর্মসূচির ‘পাল্টা’ বিজেপি নজরদারি করতে ভবানীপুর থেকে শুরু করছে।
সারা রাজ্যে করবার চেষ্টা করবে বিজেপি। তা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে সন্দিহান সব পক্ষই। কারণ বিজেপির যা সংগঠনের হাল তা দিয়ে সারা বাংলায় নজরদারি করা তাও আবার শাসকদলের উপর বেশ চাপের। বিজেপির এই কর্মসূচির বার্তায় বলা হয়েছে, গত লোকসভা নির্বাচনে কলকাতার একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস আশানুরূপ ফল না করতে পারেনি। এখন তারা তারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনি করছে। বিজেপি আশঙ্কা করছে, ওই স্ক্রুটিনির ‘মোড়কে’ বিরোধী ভোটারদের নাম কৌশলে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেবে। তার জেরে বিরোধী ভোটাররা বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না।
এবার তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটার তালিকা বিষয়ক কোর কমিটি আগামী ৬ মার্চ তৃণমূল ভবনে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে বৈঠকে বসবে। সেই বৈঠকেই ঠিক হবে রূপরেখা। পাল্টা বিজেপির কর্মসূচির বার্তায় বলা হয়েছে, ‘যদি আপনি ভোটার তালিকা সংক্রান্ত কোনও সমস্যার সম্মুখীন হন বা আপনার নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, তা হলে নিচে দেওয়া ফোন নম্বরে দ্রুত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’ নিজের মোবাইল নম্বর–সহ বার্তা পাঠিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতা জেলা বিজেপি সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ খটিক। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ির ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। হেরে যান কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এই বিষয়ে ইন্দ্রজিৎ খটিক বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র ভবানীপুর। আমরা দক্ষিণ কলকাতা লোকসভার অন্তর্গত রাসবিহারী, কসবা, বেহালা পূর্ব ও বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রেও এই কর্মসূচি শুরু করেছি। বালিগঞ্জ এবং কলকাতা বন্দর বিধানসভা কেন্দ্রের কাজ ধীর গতিতে চলছে। তবে ভবানীপুরের দিকে আমাদের বিশেষ নজর থাকছে।’