এনআরএস হাসপাতাল থেকে সোমবার ছাড়া পেলেন ট্যাংরার ‘দে পরিবারের’ ছোট ছেলে প্রসূন দে। এখনও ওই হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন তাঁর দাদা প্রণয় দে এবং ভাইপো প্রতীপ। ট্যাংরার ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রসূনের মৃত স্ত্রী রোমি দে-র বাবা। পুলিশ সূত্রে খবর, ৪৩ বছরের প্রসূন তাঁর বয়ানে দাবি করেছিলেন, দে পরিবারের দুই বধূ সুদেষ্ণা দে এবং রোমির হাত কেটেছিলেন তিনিই। প্রশ্ন উঠছে, এ বার কি প্রসূনকে ওই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করে হেফাজতে নেবে পুলিশ? হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তাঁকে ট্যাংরা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অভিষিক্তা মোড়ের কাছে একটি স্তম্ভে ধাক্কা দিয়েছিল প্রসূনদের গাড়ি। তার পরে প্রসূন, প্রণয় এবং প্রতীপকে বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে পরে তাঁদের এনআরএস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন প্রসূন। এ বার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতালে প্রসূন, প্রণয়, প্রতীপের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল। এ বার দে পরিবারের দুই ভাইকে জেরা করতে চায় পুলিশ। সে ক্ষেত্রে সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করতে পারে পুলিশ। দুই ভাইকে নিয়ে পুলিশ ঘটনার পুননির্মাণও করতে চায় বলে সূত্রের খবর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারের দুই বধূ সুদেষ্ণা, রোমি, কিশোরী প্রিয়ম্বদার কী ভাবে মৃত্যু হল, তা-ও দুই ভাইয়ের কাছে জানতে চাওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, দে পরিবারের সকলে প্রথমে ঘুমের ওষুধ মেশানো পায়েস খেয়েছিলেন। মনে করা হচ্ছে, তাতেই মৃত্যু হয়েছিল প্রিয়ম্বদার। পরে রোমি এবং সুদেষ্ণার হাতের শিরা ও গলা কাটা হয়েছিল। কার পরিকল্পনায় এ সব করা হয়েছিল, তা-ও দুই ভাইকে জেরা করে পুলিশ জানতে চায় বলে খবর। যে দিন বাড়ির তিন সদস্যের মৃত্যু হয়, সেই সময় দুই ভাই, প্রণয়, প্রসূন কে কোথায় ছিলেন, কী করছিলেন, তাও জানতে চাওয়া হবে বলে খবর।
ট্যাংরার অটল শূর লেনে ১৯ ফেব্রুয়ারি দে পরিবারের তিন মহিলা সদস্যের দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনায় খুনের অভিযোগ করেছেন মৃত রোমির বাবা। প্রসূন দাবি করেছিলেন, দুই বধূর হাতের শিরা, গলা কেটে তিনিই খুন করেছিলেন। মনে করা হচ্ছে, সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তাই তাঁকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে পারে পুলিশ।
১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ৩টের পরে ইএম বাইপাসে গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন প্রসূন। ওই গাড়িতেই ছিলেন দাদা প্রণয় এবং নাবালক ভাইপো প্রতীপ। প্রসূনদের দাবি, তাঁরাও আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই এই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। সেই দাবিও দুই ভাইকে জেরা করে পুলিশ খতিয়ে দেখতে চায় বলে খবর।