ইদানিং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে সব থেকে বড় অভিযোগ বোধহয় বহিরাগতদের দাপাদাপি। কলকাতা থেকে জেলা, বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায়শই এই বহিরাগতদের দিকে বিবিধ অভিযোগের আঙুল উঠতে দেখা যায়। এই আবহে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল বা ইসির বৈঠকে একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সিদ্ধান্তও হয়েছে বেশ কিছু। এ বার বিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্মার্ট কার্ড চালু করার পথে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই স্মার্ট কার্ড চালু করা হবে। উপাচার্য শঙ্করকুমার নাথ বলেন, ‘বহিরাগতদের প্রবেশ রুখতে স্মার্ট কার্ড ইস্যু করতে চলেছি আমরা। ভিজিটার এলে ভিজিটার্স কার্ড থাকবে। ইসি-র বৈঠকে এটা অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। আমরা দ্রুত ই-টেন্ডারিং করব। এ ছাড়া প্রচুর সিসিটিভি বসানো হচ্ছে ক্যাম্পাসে।’
কর্তৃপক্ষ চাইছে, ক্যাম্পাসে কিংবা ছাত্রাবাসে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্মার্ট কার্ড বা পাঞ্চ কার্ডই হবে চূড়ান্ত ছাড়পত্র। এই কার্ড না থাকলে ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। শুধু পড়ুয়ারাই নন, অধ্যাপক, অধ্যাপিকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী, সকলের ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্য স্মার্ট কার্ড বাধ্যতামূলক করা হবে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘বহিরাগত প্রবেশের অভিযোগ তো ছিলই। আমাদের উপাচার্য প্রবেশদ্বারে নিরাপত্তারক্ষীদের নির্দেশও দেন, খাতায় সই করে আইডেন্টিটি কার্ড দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে হবে। এ বার স্মার্ট কার্ড হচ্ছে। পড়ুয়া থেকে আধিকারিক, সকলের কাছেই সেই কার্ড থাকবে। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ।’
ইতিহাসের ছাত্রী স্নেহা গিরি বলেন, ‘এমনটা কার্যকর হলে তো খুবই ভালো হয়। পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে তো সবার আগে কর্তৃপক্ষের ভাবা দরকার। স্মার্ট কার্ড এলে সেখানে সমস্যা থাকার কোনও বিষয়ই নেই। এখন আমাদের খাতায় সই করে ঢুকতে হয়। স্মার্ট কার্ড যত তাড়াতাড়ি চালু হয়, তত ভালো।’ স্মার্ট কার্ডকে স্বাগত জানালেও কত দিন এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই।
তবে ছাত্র থেকে কর্মী সংগঠন এই ভাবনাকে স্বাগত জানালেও, বর্ধমান ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন বা বুটা-র (BUTA) সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর গোস্বামীর বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার মুক্তাঞ্চল। সেখানে অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্স প্রাধান্য পাবে, সেটাই কাম্য।