• সম্পত্তির লোভে সুপারি কিলার দিয়ে শ্বশুর–শাশুড়িকে খুন, জামাই–সহ তিন জনের যাবজ্জীবন সাজা...
    আজকাল | ০৪ মার্চ ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্পত্তির লোভে সুপারি কিলার দিয়ে শ্বশুর–শাশুড়িকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন। তারপর ভাল মানুষের নাটক করা। কিন্তু কোনও জারিজুরিতে কাজ হয়নি। গ্রেপ্তার হয়েছিল জামাই। তদন্ত নেমে পুলিশ এক সুপারি কিলার ও মেয়েকেও গ্রেপ্তার করেছিল। টানা সাড়ে চার বছর মামলা চলার পর সোমবার বারাসতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারকের আদালত তিন জনেরই যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করল। 

    পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানার টুনিঘাটা গ্রামের বাসিন্দা প্রাক্তন সেনাকর্মী রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী লীলারানি মণ্ডল খুন হন। বাড়িতেই দু’‌জনকেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। প্রাক্তন সেনাকর্মী দম্পতি খুনের ঘটনায় পুলিশ মহলে তোলপাড় পড়ে যায়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ কোনও কিনারা করতে পারছিল না। সন্দেহের বশে প্রথমে তন্ময় বর নামে পাড়ার এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিন্তু দিন কয়েকের মধ্যেই পুলিশ বুঝতে পারে, জোড়া খুনের ঘটনায় তন্ময়ের কোনও যোগ নেই। তারপর পুলিশ বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ শুরু করতে থাকে। বাড়ির লোকেদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, রামকৃষ্ণবাবুর ছোট জামাই বান্টি সাধুখাঁর প্রায় সাত লক্ষ টাকা দেনা রয়েছে। সেই দেনার টাকা শোধ করার জন্য মেয়ে নিবেদিতা বাবা–মায়ের কাছে বারবার টাকার দাবি করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা সেই টাকা দিতে অস্বীকার করেন। জামাই ও মেয়ে প্রথমে গুনিনের কাছ থেকে জল পড়া এনে তা খাইয়ে শ্বশুর–শাশুড়িকে বশ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। তারপর বান্টি শ্বশুর রামকৃষ্ণবাবু ও শাশুড়ি লীলারানিকে খুন করার ষড়যন্ত্র করেন। অজয় দাস নামে এক ভাড়াটে খুনিকে তারা এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ করেন। তাতে সহযোগিতা করেন মেয়ে নিবেদিতাও। ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে বাড়ির ছাদ বেয়ে নীচে নেমে ভাড়াটে খুনি অজয় সেনা কর্মী দম্পতিকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করে। কালো মুখোশ পরে অজয় সেদিন রাতে শ্বশুর বাড়িতে গিয়েছিল। ওই দম্পতির মাথায় ও বুকে গুলি করা হয়েছিল। পুলিশ ওই তিন জনকেই গ্রেপ্তার করে। ভাড়াটে খুনি অজয় দাসের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ওই দম্পতি খুনের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রও। 

    প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে বারাসত আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক দীপালি শ্রীবাস্তব সিনহার এজলাসে মামলা চলে। মোট ২৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সোমবার আদালত সাজা ঘোষণা করেছে। প্রাক্তন সেনাকর্মী দম্পতি খুনে আদালত জামাই বান্টি সাধুখাঁ, মেয়ে নিবেদিতা সাধুখাঁ মণ্ডল ও ভাড়াটে খুনি অজয় দাসকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দিয়েছে। সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমান। অনাদায়ে সাজার মেয়াদ আরও ছ’‌মাস বাড়বে।

     
  • Link to this news (আজকাল)