• মাধ্যমিকের পর এবার উচ্চমাধ্যমিক, শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার লড়াই রুমা এবং ঝুমার...
    আজকাল | ০৪ মার্চ ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ৯০ শতাংশ শারীরিক প্রতিকূলতাকে সঙ্গী করে মাধ্যমিকের পর এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বসল দুই বিশেষভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থী। বাবা-মা অক্লান্ত পরিশ্রম করে তাঁদের দুই কন্যাসন্তান ভবিষ্যৎ উজ্জল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

    নদীয়ার শান্তিপুর ব্লকের বাগআঁচড়া এলাকার বাসিন্দা শ্যামল মল্লিক। পেশায় টোটোচালক। স্ত্রী রেখা মল্লিক সংসারের কাজ সামলান। তাঁদের তিনটি কন্যাসন্তান রয়েছে। যার মধ্যে দুই সন্তানই ৯০% বিশেষভাবে সক্ষম। অনেকটাই ধৈর্য ধরে জীবনযাপন করতে হয় শ্যামল এবং রেখাকে। পড়াশোনা থেকে শুরু করে মেয়েরা যাতে কোনও সমস্যায় না পরে সেই দিকে যথেষ্ট খেয়াল রাখেন দু'জনেই। রুমা মল্লিক এবং ঝুমা মল্লিক, দু'জনেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল সফল ভাবে। এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পালা। সেই মতো সোমবার সকাল সকাল দুই মেয়েকে নিজের টোটোতে করেই শান্তিপুর মিউনিসিপাল উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে আসেন। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী রেখা। টোটো থেকে নামতেই পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ে কর্তব্যরত শিক্ষক-শিক্ষিকারাও হাতে হাত ধরে রুমা এবং ঝুমাকে নিয়ে যান পরীক্ষাকেন্দ্রে। 

    সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শ্যামল জানান, তাঁর দুই কন্যাসন্তান ছোট থেকেই প্রতিবন্ধী। একজন ঠিক মতো হাঁটতে পারেনা, অন্যজন ঠিক মতো কথাও বলতে পারেনা। কিন্তু দু'জনেরই রয়েছে অদম্য ইচ্ছেশক্তি। রাইটারের মাধ্যমে দু'জনেই পড়াশোনায় মনোযোগ দেয়। দুই কন্যাসন্তানের ইচ্ছাশক্তিকে পাথেয় করে দরিদ্রতার মধ্য দিয়েও তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন এখনও তিনি। সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলেও এখনও কাটছেনা আর্থিক অনটন। টোটো চালিয়ে সারাদিনে যা রোজগার হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই শ্যামল এবং রেখার চোখেমুখে রয়েছে স্বপ্ন। দুই সন্তানই সফলভাবে উত্তীর্ণ হবে বলে আশাবাদী তাঁরা।
  • Link to this news (আজকাল)