‘গড়িমসির জন্য বাংলার ভবিষ্যৎ যেন বিপন্ন না হয়’, শিল্প বৈঠকে কড়া বার্তা মমতার
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৪ মার্চ ২০২৫
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন হয়ে গিয়েছে। তবে একমাস এখনও কাটেনি। এই আবহে রাজ্যের শিল্পায়নে গতি আনতে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যস্তরে গঠিত হল শিল্প সমন্বয় কমিটি ও তারই সঙ্গে উদ্বোধন হল নতুন পোর্টালেরও। তবে শিল্প নিয়ে টালবাহানা সহ্য করবে না রাজ্য সরকার। স্টেট লেভেল ইনভেস্টমেন্ট সিনার্জির বৈঠকে এই কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, শিল্পের অনুমোদন দিতে কোনও কাজ ফেলে রাখা যাবে না। কেউ যদি এই কাজে দেরি করেন বা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই কাজ না করেন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এখানেই শেষ নয়, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে জোর দেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি। ‘লালফিতের জট’ কাটাতে তৎপর মুখ্যমন্ত্রী। তাই তাঁর বার্তা, যে ফাইল আটকে রয়েছে, সেটা কেন আটকে আছে, দ্রত বিষয়টি খতিয়ে দেখে সেই সমস্যা নিষ্পত্তি করতে হবে। কোনওরকম ঢিলেমি বরদাস্ত করা হবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মেধা থেকে দক্ষতা, বাংলা সবদিক থেকে এগিয়ে। অথচ গড়িমসির জন্য অনেক সময় অনেক প্রজেক্ট দেরি হয়ে যায়। এটা আর সহ্য করা হবে না। কোথায় আটকে রয়েছে খতিয়ে দেখতে হবে। সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে হবে। গড়িমসির জন্য বাংলার ভবিষ্যৎ যেন নষ্ট না হয়। তার জন্যই এই পোর্টাল।’
এদিকে আজ শিল্প বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী স্টেট লেভেল সিনার্জি কমিটি তৈরির কথা বললেন। তিনি জানান, প্রতি ৪ সপ্তাহ পর বৈঠক করবে এই কমিটি। বহুদিন ধরেই বহু ফাইল আটকে আছে। তার জেরে আটকে বেশ কিছু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। এই সমস্যা সমাধানে অফিসারদের তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ভাল করে ফাইল স্টাডি করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘গড়িমসির জন্য বাংলার ভবিষ্যৎ যেন বিপন্ন না হয়। মানুষের কাজের জন্য সরকার প্রজেক্ট দেয়। এই প্রকল্পের জন্য তাদের কাছে থেকে একটা টাকাও নেওয়া যাবে না। এই টাকা নেওয়ার অধিকার কারও নেই। যদি কেউ এই কাজ করেন তাহলে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেব।’
অন্যদিকে রাজ্যে এখন অনেক শিল্পপতি বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। রাজ্য জুড়েই নানা জেলায় এই শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগের কাজ চলছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তার ফলে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর, বীরভূমে দেউচা পাঁচামি প্রকল্প–সহ নানা ক্ষেত্রে অনেক কর্মসংস্থান হবে বলেও দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘সব ডিপার্টমেন্টে জমি পড়ে আছে। অনেকে খোঁজও রাখেন না। প্রত্যেক বিভাগকে বলব, তাদের কোথায় কত জমি পড়ে আছে, যেগুলি দখল হয়ে যাচ্ছে, আগামী ৭ দিনের মধ্যে আমাদের জানাতে হবে। যদি কেউ না পাঠান তাঁর সেই দফতরে থাকার অধিকার নেই। শুধুই কলকাতা কেন্দ্রিক শিল্প হলে তো হবে না। জেলাতেও আমাদের প্রচুর জমি আছে। কেউ টাকা চাইলে সরাসরি অভিযোগ করুন। সরকারি কাজের জন্য কারও থেকে টাকা নেওয়া অপরাধ।’