• পলাশ বাঁচাতে উদ্যোগী পুরুলিয়া জেলা পুলিস, সচেতনতার বার্তা
    বর্তমান | ০৪ মার্চ ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: পলাশ গাছে থাকলেই সুন্দর। ডাল না ভেঙে পলাশ ফুলকে রক্ষা করুন। পলাশের সৌন্দর্য উপভোগ করুন। জঙ্গলে আগুন লাগাবেন না— জেলা পুলিস এমন বার্তা দিয়ে পলাশ ফুলকে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন থানার তরফে রাস্তার ধারে সচেতনতার বার্তা দিয়ে ব্যানার লাগানো হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে রাস্তার ধারে পুলিসের তরফ থেকে বিশেষ ক্যাম্প করা হয়েছে। যেখানে সিভিক ভলান্টিয়াররা পলাশ ফুল পাহারা দিচ্ছে। প্রকৃতিপ্রেমীরা প্রশাসনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে। রঘুনাথপুর বনাঞ্চলের রেঞ্জার নিলাদ্রী সখা বলেন, বনদপ্তরের তরফ থেকে পলাশ গাছকে বিশেষ সংরক্ষণের আওতায় রাখা হয়েছে। পলাশ গাছ কাটা, ডাল ভাঙা বা ফুল তোলার মতো বিষয়গুলি আমাদের কর্মীরাও নজরে রাখে। পলাশ ফুলকে নিয়ে পুলিসের তরফ থেকে যেভাবে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে তাকে সাধুবাদ জানাতে হয়।


    জেলার বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুরুলিয়ার সৌন্দর্য পলাশ ফুল। তাই পলাশ ফুটতেই  পুরুলিয়া জেলা আবেগে ভাসতে শুরু করেছে। জেলাজুড়ে পলাশ দেখতে প্রতিদিন পর্যটকের ভিড় জমছে। এই ভিড় চলবে দোল পর্যন্ত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একসময় শীতের আমেজ আর সবুজ বনভূমি দেখতে পর্যটকরা পুরুলিয়া আসত। কারণ এখানের শীতের আবহাওয়া দার্জিলিং, কালিম্পংকে টেক্কা দিয়ে থাকে। তবে ইদানিং সারা বছর ধরেই পর্যটকের আনাগোনা চলতে থাকে। বিভিন্ন জায়গায় পলাশ উৎসবও হচ্ছে। যারা ঘুরতে আসছেন, তাঁরা পলাশ গাছের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। জেলায় পর্যটন নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন এজেন্সির লোকরা কোথায় থাকলে, কীভাবে পলাশ ফুল দেখতে পাওয়া যাবে তার সন্ধান দিয়ে চলেছেন।  সাধারণত পুরুলিয়া জেলার ২০টি ব্লকে পলাশ ফুলের দেখা মেলে। বর্তমানে বনদপ্তরের তরফ থেকে পলাশ গাছকে সংরক্ষণের আওতায় নিয়ে আসায় গাছের সংখ্যা বেড়েছে। ফলে বসন্ত আসতেই সারা পুরুলিয়া রক্তিম হয়ে উঠে। তবে প্রতিবছর বসন্তকাল এলেই নির্বিচারে পলাশের ডাল ভেঙে ফুল সংগ্রহ করে পর্যটকদের সামনে মালা নিয়ে উপস্থিত হয় স্থানীয় কচিকাঁচা থেকে কিশোর-কিশোরীরা। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের তরফে অভিযান চালানো হলেও নজরদারি কমলেই রমরমিয়ে বিক্রি হয় পলাশ ফুলের মালা। ফলে গাছ নষ্ট হয়। জেলা পুলিসের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পর্যটকরা পলাশ ফুলের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়। তাই সেই ফুলকে যদি তুলে নেওয়া হয় অথবা ডাল ভেঙে ফেলা হয় তাহলে গাছের যেমন ক্ষতি হয় তেমনি সৌন্দর্য নষ্ট হয়। আবার এই সময় অনেকেই জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেয়। ফলে প্রশাসনকে আগুন নেভাতে অনেক বেগ পেতে হয়। তাই মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন জঙ্গলের ধারে সচেতনতমূলক ব্যানার লাগানো হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিস ক্যাম্প করা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)