• নির্দেশ অমান্য করে রামপুরহাট মেডিক্যালের সামনে নিকাশি নালার উপর ফের অস্থায়ী খাবারের দোকান
    বর্তমান | ০৪ মার্চ ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: মহকুমা শাসকের নির্দেশ অমান্য করে রামপুরহাট মেডিক্যালের সামনে নিকাশি নালার উপর সারিবদ্ধভাবে অস্থায়ী খাবারের দোকান ফের চালু হয়েছে। খোলা খাবারের উপর মাছি ভনভন করছে। জনস্বাস্থ্য নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এবার আইনি পদক্ষেপের দিকে হাঁটছে প্রশাসন। মহকুমা শাসক সৌরভ পাণ্ডে বলেন, অস্থায়ী দোকানদারদের সর্তক করে সরে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। সেইসময় তাঁরা সরে গেলেও ফের দোকানপাট খুলে দিয়েছেন। মানুষজন সেইসব খাবার খাচ্ছেন। এবার দোকানদারদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। 


    রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে জাতীয় সড়কের ধারে মহানালা রয়েছে। সেই নালার উপরই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কেউ পাকা, কেউবা চালাঘর বানিয়ে খাবারের দোকান চালিয়ে আসছেন। দোকানদার ও ক্রেতারা সেই নালাতেই নোংরা-আবর্জনা ফেলছিলেন। যার জেরে মহানালা বুজে গিয়েছিল। যার জেরে মেডিক্যালের ভিতরের নিকাশি নালা ছাপিয়ে জলমগ্ন হয়ে পড়ে গোটা চত্বর। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি টানা দশদিন ডিজিটাল এক্স-রে পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে জলমগ্ন হয়ে পড়ে হাসপাতালের ভিতরে থাকা প্রাচীন বাবলা কালী মন্দির। প্রশাসনের নির্দেশে মহানালার উপর থাকা দোকানদারদের সরিয়ে গত ১৮ফেব্রুয়ারি থেকে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে মহানালায় জমে থাকা নোংরা-আবর্জনা জেসিবি দিয়ে তুলে পাড়ে তুলে রাখা হয়েছে। এদিকে সেই নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত কাদার উপরই খাবারের দোকান বসে পড়েছে। কোথাও তেলেভাজা, কোথাও ভাতের হোটেল, চায়ের দোকান চলছে। মাছি ভনভন করছে সেইসব খাবারে। তেমন‌ই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এরই মধ্যে খাবার তৈরি হচ্ছে। দামে সস্তা ও সহজলভ্য হওয়ায় রোগীর আত্মীয়-পরিজনরা সেইসব খাবার খাচ্ছেন। কোথাও আবার খাবারের জলভর্তি জার রাখা হয়েছে নালায়। এরই মধ্যে চলছে থালা, বাসন ধোয়া।


    গত ২০ ফেব্রুয়ারি মহানালা সংস্কারের কাজ খতিয়ে দেখতে এসে মেডিক্যাল চত্বরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবারের দোকান চলা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মহকুমা শাসক। তিনি ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দোকান সরানোর নির্দেশ দেন। ব্যবসায়ীদের হুঁশ না ফিরলে এলাকায় ডায়ারিয়া দেখা দিলে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। যতদিন না পাকা নালার কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে, ততদিন অন্যত্র দোকান চালানোর জন্য বলা হয়। সেইমতো দোকানদাররা কয়েকদিন সরে গেলেও সম্প্রতি সেই ময়লার উপর খাবারের দোকান খুলে বসেছেন। 


    মেডিক্যালের অধ্যক্ষ করবী বড়াল বলেন, সত্যিই অবাক ও চিন্তা করার বিষয়। প্রশাসনের নির্দেশ মানছে না। এতে জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে। খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে একসঙ্গে বহু রোগীর আত্মীয়ের প্রাণ সংশয় দেখা দিতে পারে। নিকাশি নালা ও তুলে রাখা আবর্জনার উপর আবার নোংবা ফেলা শুরু হয়েছে। আবার নালা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন যে কাজ করবে তার উপায় নেই। মহকুমা শাসক বলেন, নিষেধ করা সত্ত্বেও ওই ব্যবসায়ীরা শোনেননি। এবার আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। যদিও ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে নালার আবর্জনা তুলে রেখে দেওয়া হয়েছে। কতদিন দোকান বন্ধ রাখা যায়? এই ব্যবসার আয়েই সংসার চলে। বাধ্য হয়ে দোকান খুলতে 


    হয়েছে। পাকা নালা নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)