আন্দ্রিজ, আন্টার্টিকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী
বর্তমান | ০৪ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: উষ্ণায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্ব কীভাবে রক্ষা পাবে তার উপায় বের করতে আন্দ্রিজ, আন্টার্টিকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন ছাত্রী। উষ্ণপ্রসবণ বা আগ্নেয়গিরি সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে তাঁর পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন অর্পণা বন্দ্যোপাধ্যায় চিলির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন। সোমবার তিনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সেমিনারে যোগ দেন। তিনি বলেন, বিশ্বে যখন প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া যায় সেই সময় উষ্ণতা অনেক বেশি ছিল। সেই পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে প্রাণের অস্তিত্ব টিকে থাকে। সেটা কীভাবে সম্ভব ছিল তারই উৎস সন্ধানে গবেষণা চলছে। আন্দ্রিজে বহু দ্বীপ রয়েছে। সেখানে উষ্ণপ্রসবণও রয়েছে। চিলিতে প্রায় ৪০০ উষ্ণপ্রবণ কেন্দ্র রয়েছে। সেই সব এলাকায় বহু প্রাণী রয়েছে। তারা কীভাবে ওই পরিবেশে মানিয়ে নিচ্ছে তা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। আন্টার্টিকায় দু’টি আগ্নেয়গিরি রয়েছে। সেখানে ১০১ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। গভীর সমুদ্রখাতে গিয়ে কাজ করেছি। সাড়ে চার কিলোমিটার গভীরে গিয়ে সেখানে কী ধরণের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে তার খোঁজ করা হয়েছে। আন্টার্টিকায় মানুষের বসতি নেই। সেই কারণে সেটিকে একটি ল্যাবরেটরি হিসাবে ধরা হয়। সেখানে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করা যায়। বিভিন্ন দেশের গবেষকরা তা নিয়ে কাজ করছেন। আগামী দিনে উষ্ণায়ন মোকাবিলার টিপস পাওয়া যাবে।
বর্ধমান বিশ্ববিদালয়ের প্রাক্তন ওই ছাত্রী আসানসোলের পানিফলা থেকে গবেষণা শুরু করেন। তাঁর বাড়িও আসানসোলেই। বক্রেশ্বর উষ্ণপ্রসবণে গবেষণা করার পর তিনি চিলিতে যান। বর্তমানে সেখানেই তিনি থাকেন। তিনি বলেন, উষ্ণপ্রসবণ এলাকা গবেষণার জন্য বেছে নেওয়ার জন্য একাধিক কারণ রয়েছে। ওই এলাকায় তাপমাত্রা অনেক বেশি। সেখানেও বেশ কিছু প্রাণী দিব্যি রয়েছে। সেই পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার জন্য কীভাবে প্রাণের বিবর্তন ঘটছে সেটাও বোঝা যায়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের উষ্ণপ্রস্রবণ এলাকায় তাপমাত্রা ভিন্ন রয়েছে। বিভিন্ন ধরণের প্রাণীর অস্তিত্ব সেখানে রয়েছে। নানা ধরনের নতুন ব্যাকটেরিয়ার হদিশও পাওয়া গিয়েছে। তিনি বলেন, আগামী দিনে উষ্ণতা বাড়বেই। এখন দ্রুত আবহাওয়া বদলে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে অস্তিত্ব টিঁকিয়ে রাখার জন্য প্রাণ শুরুর সৃষ্টি লগ্নে যেতে হবে। কীভাবে বিবর্তন হয়েছে সেটা জানাও জরুরি। সেসব জানার জন্যই গবেষণা চলছে। আন্টার্টিকার একটি দ্বীপে প্রথম ভারতীয় হিসাবে যাওয়ার স্বীকৃতি মিলেছে। চিলি সরকারও গবেষণার কাজে সহযোগিতা করেছে। তিনি বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশের কাছে থ্রেট উষ্ণপ্রস্রবণ। সেটা মোকাবিলা করার জন্যই বিভিন্ন দেশের গবেষকরা দ্বীপে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। উষ্ণপ্রস্রবণের পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে গিয়েও পরীক্ষা চলছে। অর্পণা বন্দ্যোপাধ্যায়।