‘সুস্থ’ বলে তিনদিন আগে ছুটি দেয় হাসপাতাল অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু ঘিরে মেডিক্যালে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ
বর্তমান | ০৪ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর ‘দেরি আছে’ বলে তিনদিন আগে ছুটি দিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেসময় সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন ওই অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু সোমবার সকালে ফের প্রসব যন্ত্রণা উঠলে হাসপাতালে আনার পথেই মৃত্যু হয় মহসিনা খাতুন (২৫) নামে ওই অন্তঃসত্ত্বার। সদর ব্লকের বাহাদুর পঞ্চায়েতের সরকারপাড়ার বাসিন্দা ওই মহিলার মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের অধীন মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে তদন্তের দাবিতে সরব হয় মৃতার পরিবার। হাসপাতালে বিক্ষোভও দেখায় তারা। পুলিস এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। যদিও এদিন রাত পর্যন্ত ওই ঘটনায় মৃতার পরিবার কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।
মেডিক্যালের সুপার কল্যাণ খাঁ বলেন, ওই প্রসূতির ১৭ মার্চ প্রসবের তারিখ ছিল। প্রসব যন্ত্রণা হচ্ছে বলে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তাঁকে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হবে ভর্তি করে পরিবার। চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখেন, ফলস পেইন হচ্ছে ওই অন্তঃসত্ত্বার। এরপর ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখে ২৮ তারিখ থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। সেসময় ওই অন্তঃসত্ত্বা পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। তাঁকে ৩ মার্চ হাসপাতালে আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এদিন সকালে ব্রট ডেড অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসে পরিবার। এদিন ওই মহিলার দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে তাঁর মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব হবে। তবে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। মৃতার স্বামী পেশায় দিনমজুর শাহজাহান সিরাজের অভিযোগ, প্রসব যন্ত্রণা উঠলে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্ত্রীকে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হবে ভর্তি করেছিলাম। ২৮ তারিখ তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয়, সন্তান প্রসবের সময় এখনও হয়নি। এরপর এদিন সকালে ফের প্রসব যন্ত্রণা উঠলে স্ত্রীকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালে আনার পর ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসকরা দেখে বলেন, দেরি হয়ে গিয়েছে। আমাদের প্রশ্ন, তাহলে হাসপাতালে ভর্তি করার পরও তিনদিন আগে স্ত্রীকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হল কেন? তাছাড়া যখন হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছি, তখন পুরোপুরি সুস্থ ছিল স্ত্রী। হঠাৎ করে সে মারা গেল কেন?
মৃতার পরিবারের বক্তব্য, হাসপাতালের এই টানাপোড়নের জেরেই মহসিনার মৃত্যু হয়েছে। মেডিক্যালের সুপারের অবশ্য দাবি, পরিবার কী বলছে তা জানি না। হাসপাতালের নথি যা রয়েছে, সেই অনুযায়ী আমরা কথা বলছি।