বাম আমলে নিযুক্ত চুক্তিভিত্তিক পুরকর্মীরা পেনশনের যোগ্য নন, নির্দেশ হাইকোর্টের
বর্তমান | ০৪ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাম আমলে রাজ্যের পুরসভাগুলিতে নিযুক্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা পেনশনসহ অবসরকালীন বাকি সুবিধা পাওয়ার যোগ্য নন। একটি মামলার রায়ে এমনটাই জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
এদিকে, এই রায়ের পর সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিভিন্ন পুরসভা নিজেদের ইচ্ছামতো কর্মী নিয়োগ করছে। তাতে সমস্যা হচ্ছে। এভাবে হবে না। রাজ্য অর্থদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া কোনও কর্মী নিয়োগ করা যাবে না। ঘটনা হল, বাম আমলে পুরসভাগুলিতে কয়েক লক্ষ চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ পেয়েছিলেন। ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে পুরবোর্ডের অনুমোদন থাকলেও বহু কর্মীর ক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমোদন ছিল না। সেইসময় চুক্তির ভিত্তিতে কর্মীরা পেনশন এবং অবসরকালীন ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা পাবেন না বলে জানিয়েছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। তাঁর পর্যবেক্ষণ, রাজ্যের অনুমোদন ছাড়া শুধুমাত্র পুরবোর্ডের অনুমতি নিয়ে যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে, এমন ক্ষেত্রে কর্মীরা ওই আর্থিক সুবিধা পাওয়ার যোগ্য নন।
মূলত, পুরসভার তহবিল থেকেই এইসব চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেতন দেওয়া হতো। কিন্তু পুর আইন অনুযায়ী, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমোদন বাধ্যতামূলক। মামলাকারী ছিলেন রায়গঞ্জ পুরসভার একটি প্রাথমিক স্কুলে চুক্তিভিত্তিক কর্মী। তাঁর মৃত্যুর পর অবসরকালীন ভাতা, পেনশন ও অন্যন্য আর্থিক সুবিধার দাবিতে তাঁর স্ত্রী আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই মামলা আদালত খারিজ করে দেয়। আদালতের বক্তব্য, পুরসভা চুক্তিতে নিয়োগের পর রাজ্যের অনুমোদন নিয়ে ওই পদ নিয়মিত নিয়োগ করা হয়নি। তাই পুর আইন মোতাবেক তিনি অন্যান্য সুবিধা পাবেন না।
মামলায় পুরসভার আইনজীবী শীর্ষণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্ক নাগ স্পষ্ট করেছেন, ২০১১ সালের পর যাঁরা চুক্তিভিত্তিক নিযুক্ত হয়েছেন, তাঁদের বিভিন্ন রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে নিযুক্ত কয়েক লক্ষ চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের রাজ্য অনুমোদন দিয়েছে। যদিও আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘খুবই পরিষ্কার একটি বিষয়। যাঁকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, সেই নিয়োগ অনুমোদিত হলে সমস্ত সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য। এই মামলার ক্ষেত্রের সঠিক পদ্ধতি না মানা হলে আবেদনকারীরা ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হতে পারেন।’ যদিও এই মামলার রায়ের পর প্রশ্ন উঠছে, তাহলে বাম আমলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে কি সঠিক নিয়ম মানা হয়নি?