ট্যাংরা কাণ্ড: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ধৃত ছোটভাই প্রসূন
বর্তমান | ০৪ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ট্যাংরার ব্যবসায়ী পরিবারের তিন খুনের ঘটনায় অবশেষে ১২ দিনের মাথায় প্রথম কেউ গ্রেপ্তার হল। দুর্ঘটনার কবল থেকে সুস্থ হয়ে সোমবার বিকেল চারটে নাগাদ এনআরএস হাসপাতাল থেকে ছুটি পান ছোট ভাই প্রসূন দে। সেখান থেকে তাঁকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় ট্যাংরা থানায়। গভীর রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিস।
খুনের অভিযোগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রসূনকে। আজ, মঙ্গলবার অভিযুক্তকে শিয়ালদহ আদালতে পেশ করে হেফাজতে চাইতে পারেন তদন্তকারীরা। সেটা হলে ১৮ ফেব্রুয়ারি দে বাড়িতে ঠিক কী হয়েছিল, তা জানতে প্রসূনকে সঙ্গে নিয়েই আজই ঘটনার পুনর্নির্মাণে নামার পরিকল্পনা করেছে পুলিস। বড় ভাই প্রণয়কেও গ্রেপ্তার করা হবে কি? সে বিষয়ে এখনও স্পষ্টভাবে কিছু জানায়নি লালবাজার। অন্যদিকে, এখনও পর্যন্ত প্রণয়ের নাবালক ছেলের দায়িত্ব নিতে পরিবারের তরফে কেউ আগ্রহ দেখাননি।
১৯ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে রুবি মোড়ের কাছে ইএম বাইপাসের উপর ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় সেই গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় দুই ভাই প্রসূন, প্রণয় ও ১৪ বছরের ছেলেকে। গাড়ি চালাচ্ছিলেন প্রসূন। তাঁর পাশের সিটে বসেছিল নাবালক। পুলিসকে তখনই প্রণয় জানান, ‘বাড়িতে যান, আরও দু’টো বডি পাবেন’। চাঞ্চল্য বক্তব্য শোনার পরই ট্যাংরার দে বাড়িতে পৌঁছয় পুলিস। বৈভবে মোড়া ব্যবসায়ী পরিবারের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় দুই বধূ ও প্রসূনের মেয়ে প্রিয়ংবদার দেহ। লালবাজার জানিয়েছে, বৌদি সুদেষ্ণা দে ও স্ত্রী রোমি দে’র হাতের শিরা ও গলা কেটে খুনের কথা স্বীকার করেছে প্রসূন। সেই মোতাবেক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, প্রিয়ংবদাকে হত্যা করা হয়েছে অতিরিক্ত পরিমাণে ঘুমের ওষুধ প্রয়োগ করে। পায়েসের মধ্যে মিশিয়ে তা খাওয়ানো হয়েছিল কিশোরীকে। সেই কাজ করল কে? লালবাজারের এক কর্তার কথায়, এখনও পর্যন্ত সেই বিষয়টি নিয়ে প্রসূন কিংবা প্রণয় কেউই কিছু জানেন না বলে দাবি করছেন। এই ধোঁয়াশা কাটবে কবে? তদন্ত চালাচ্ছে লালবাজার।
কলকাতা পুলিসের দাবি, একটি পেপার কাটিং ছুরি দিয়ে সুদেষ্ণা ও রোমির কব্জি ও গলা কাটা হয়। ঘটনাস্থল থেকে সেটি উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। সেই ছুরি বাড়িতেই ছিল। কিন্তু, খুন করে আত্মহত্যার পরিকল্পনা তো ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে করছিলেন দুই ভাই। সেখানেই দুই ভাইকে জেরা করে পুলিস জেনেছে, প্রাথমিকভাবে নিজেদের কারখানার ধারালো ও বড় ছুরি দিয়ে খুনের পরিকল্পনা ছিল ধৃতের। কিন্তু, দাদা জানান, তা হাতে ধরতে সমস্যা হতে পারে। তাই মেয়ের স্কুলের প্রজেক্টের কাজে ব্যবহৃত পেপার কাটারকেই খুনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন প্রসূন। নিজস্ব চিত্র