‘কাকু ইলিশ নেবেন?’ ভক্তিভরে প্রণাম করে টাকা নিয়ে পগারপার
বর্তমান | ০৪ মার্চ ২০২৫
সংবাদদাতা, বনগাঁ: কাকু ইলিশ মাছ নেবেন? পায়ে হাত দিয়ে নমস্কার করার পর নিলেন কাকুর শরীরের খোঁজখবর। এরপর ইলিশ এনে দেওয়ার নাম করে কাকুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে পগারপার যুবক। নিয়ে গেল সাইকেলে ঝোলানো বাজারের ব্যাগও। এমনই অদ্ভুত প্রতারণার শিকার বনগাঁর রেটপাড়ার বাসিন্দা সুজিতকুমার রায়। বোকা বনে যাওয়ায় কিছুটা লজ্জিত তিনি। প্রতারিত হয়ে তাঁর একটাই দাবি, ওই যুবককে ধরুক পুলিস। নাহলে আরও কেউ প্রতারিত হবেন।
রবিবার দিন গড়িয়ে সবে সন্ধ্যা হয়েছে। বাড়ি থেকে সাইকেল নিয়ে বের হচ্ছিলেন সুজিতকুমার রায়। হঠাৎ এক যুবক এসে দাঁড়াল তাঁর সামনে। কাকু বলে সম্বোধন করে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম সেরে শরীরের খোঁজ নিল সে। ওই যুবককে দেখে কিছুটা হতচকিত হয়ে যান সুজিত বাবু। বলেন, ‘তোমাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না।’ জিন্স, টি শার্ট পরা স্মার্ট যুবকের জবাব, আমাকে চিনতে পারছেন না? এরপর সুজিতবাবুর এক পরিচিত চিকিৎসকের নাম করে সে। ওই যুবক বলে, ওই চিকিৎসকের আত্মীয় সে। কিছুটা আশ্বস্ত হন সুজিতবাবু। এরপরই যুবক বলেন, কাকু ইলিশ মাছের ব্যবসা করছি। বাংলাদেশ থেকে এক গাড়ি ইলিশ এসেছে। কিন্তু শুল্ক দপ্তরের ছাড়পত্র না মেলায় খরিদ্দার পাইনি। আপনি যদি চারটি মাছ কেনেন। ওই যুবকের আকুতিতে ২৮০০ টাকার বিনিময়ে চারটি মাছ কিনতে সম্মত হন তিনি। পকেট থেকে টাকা বের করে যুবককে দিয়েও দেন। সুজিতবাবুর সাইকেলে থাকা বাজারের ব্যাগটিও নিয়ে নেয় যুবক। এরপর সে জানায়, কাকু রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করানো আছে। আপনি দাঁড়ান। আমি মাছ নিয়ে আসছি। মাছের অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও সেই ইলিশ আর পাননি সুজিতবাবু। বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
কিছুদিন আগে এভাবেই অভিনব কায়দায় প্রতারণার শিকার হন বনগাঁর একাধিক বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরা। বাসিন্দাদের মতে, শহরে একটি চক্র সক্রিয়। সেই চক্রের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। সুজিতকুমার রায় বলেন, ছেলেটি পায়ে হাত দিয়ে নমস্কার করতেই কেমন একটা ঘোর এসে গেল। মাছের জন্য টাকা চাইতেই দিয়ে দিলাম। পরে বুঝতে পারলাম আমি প্রতারিত হয়েছি। আমি চাই অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হোক।