ঝামেলার মধ্যে পড়ে যাব না তো? ধর্মঘট আতঙ্কে আগেভাগেই হাজির পরীক্ষাকেন্দ্রে
বর্তমান | ০৪ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল একাধিক বাম ছাত্র সংগঠন। শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার বৈঠক ও তাকে কেন্দ্র করে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়, তার সূত্রেই এদিন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গা ঘেঁষে রয়েছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠ। সেখানে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সিট পড়েছে যথারীতি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হলেও স্বভাবতই দুশ্চিন্তা বেড়েছিল পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। অনেকে ভেবেছিলেন, ‘পরীক্ষার হলে ঢোকার আগেই ঝামেলায় পড়ে যাব না তো!’ তাঁদের এই উদ্বেগ যে কতখানি সত্যি, এদিন সকালে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়াতেই তা স্পষ্ট হল। দেখা গেল, আগেভাবে সেন্টারে ঢুকে যেতে অনেকেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন আগেভাগে। তবে শেষমেষ কারও কোনও সমস্যা হয়নি। অভিভাবকদের বক্তব্য, ‘নির্বিঘ্নে আসতে পেরেছি। পরীক্ষাও হয়েছে ভালোভাবে।’
যাদবপুর বিদ্যাপীঠে সকাল সাড়ে ন’টার মধ্যেই প্রায় সমস্ত পরীক্ষার্থী ঢুকে যান। ছেলে-মেয়েকে পরীক্ষা হলে দিয়ে মা-বাবা ফুটপাতে বসেই আড্ডায় মজেছেন। সেখানে কান পাততেই শোনা গেল ধর্মঘট নিয়ে ভরপুর টেনশনের কথা। কেউ বললেন, ‘পরের দিন থেকে আর এত তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে বেরব না।’ কেউ বললেন, ‘সবই তো স্বাভাবিক। কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। শুধু শুধু এত আগে বেরলাম। আসলে টিভিতে খবর দেখেই টেনশনটা বেড়েছিল।’ নাতিকে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের পরীক্ষাকেন্দ্রে এনেছিলেন নরেন্দ্রপুরের কল্পনা পাইন। ফুটপাতে খবরকাগজ পেতে বসে রয়েছেন। বললেন, ‘প্রথম দিনের পরীক্ষা। তার উপর আবার ধর্মঘট। তাই অনেকটা আগে বেরিয়েছিলাম। গড়িয়া আসার জন্য টোটো পেতে একটু সমস্যা হয়েছিল। গড়িয়া থেকে অটোয় যাদবপুরে এলাম। চিন্তা একটা ছিলই। তবে সেরকম কিছু দেখলাম না।’ যাদবপুরেই থাকেন তাপসী দাস। তাঁর মেয়ের সিট পড়েছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠে। তিনি বলছিলেন, ‘কাল থেকে খবরে দেখছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ে খুব ঝামেলা হচ্ছে। এখানে তো যখন-তখন মিটিং-মিছিল শুরু হয়ে যায়। তবে কপাল ভালো, আজ কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি।’ সাতপাঁচ ভেবে তাপসীদেবী মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন সকাল সাড়ে ৮টাতেই। সন্তোষপুরের বাসিন্দা প্রকাশ মণ্ডল তাঁর ছেলেকে নিয়ে এসেছিলেন পরীক্ষাকেন্দ্রে এসেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘আমার একেবারেই কোনও চিন্তা ছিল না। ৯টা নাগাদ বেরিয়েছি বাড়ি থেকে। ভালোভাবেই পৌঁছে গিয়েছি।’
যাদবপুর বিদ্যাপীঠে যখন পরীক্ষা চলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের বাইরে তখন চলছে এসএফআই এবং ডিএসও কর্মী-সমর্থকদের জোরদার স্লোগান। তবে এসএফআইয়ের দাবি, সংগঠনের কর্মীরাই অভিভাবকদের কাছে গিয়ে জেনে এসেছেন, তাঁদের কোনও সমস্যায় পড়তে হয়েছে কি না! অভিভাবকরা তাঁদের কোনও অভিযোগ করেননি।