এই সময়: যাদবপুরের ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ইংরাজি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ইন্দ্রানুজ রায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। যাদবপুরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়িতে হামলা হয়, তাঁকে হেনস্থাও করা হয়। মূলত, এই দু’টি ঘটনার তদন্তে ৫০ জনের বেশি পড়ুয়ার নামের তালিকা পেল কলকাতা পুলিশ। তাঁদের মধ্যে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী।
রবিবার, ঘটনার দিন ওয়েবকুপার সম্মেলনে তাঁরা কী উদ্দেশে জড়ো হয়েছিলেন? তাঁদের কোনও ‘অসৎ’ উদ্দেশ্য ছিল কি না, গাড়ির চাকায় ইন্দ্রানুজ আহত হয়েছিলেন, নাকি অন্য কোনও ঘটনা ঘটেছিল––প্রাথমিক ভাবে তদন্ত সে দিকেই এগোচ্ছে। ঘটনার দিন সিসিটিভি এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ফুটেজে অনেকের ছবি ধরা পড়েছে।
সেই সূত্রে একদিকে যেমন অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তেমনই আবার সাতটি অভিযোগের ভিত্তি বেশ কিছু নামও জমা পড়েছে যাদবপুর থানায়। ওই সব ছাত্র এবং প্রাক্তনীদের কার, কী ভূমিকা ছিল, তা জানতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের থানায় তলব করা হতে পারে বলেই লালবাজার সূত্রে খবর। যাদবপুরের বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাতটি মামলা দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে দু’টি মামলা স্বতঃপ্রণোদিত দায়ের করছে যাদবপুর থানা।
পুলিশের তরফে যে মামলাটি করা হয়েছে, তাতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং তাঁর সহযোগীদের হেনস্থা ও আঘাত করার অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওই মামলাটি হয়েছে। তা ছাড়া পুলিশের আরও একটি মামলায় সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, মারধর, অবরোধ, গোলমাল পাকানোর ধারা যোগ করা হয়েছে। লালবাজার সূত্রে খবর, এই দু’টি মামলায় নির্দিষ্ট করে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ না হওয়ায়, কারা ওই গোলমালের ঘটনায় জড়িত ছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু প্রবেশ করার পর বিশৃঙ্খলার পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করছেন পড়ুয়াদের একাংশ। অভিযোগ, বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে, শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির চাকাতেই গুরুতর আহত হয়েছেন ইন্দ্রানুজ রায়। যদিও টিএমসিপি ছাত্র সংগঠনের তরফে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল? তা জানতে সিসিটিভি এবং মিডিয়ার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে যাদবপুর থানার তদন্তকারী অফিসারেরা।
একই ভাবে আবার তিনটি অভিযোগপত্রে ইন্দ্রানুজের বিরুদ্ধে গোলমাল পাকানোর অভিযোগও আনা হয়েছে। আপাতত ইন্দ্রানুজের শারীরিক অবস্থার উপর নজর রাখছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। সুস্থ হলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলেই জানা যাচ্ছে। ইন্দ্রনুজের সতীর্থরা দাবি করেছেন, তাঁর চোখ এবং পায়ের উপর দিয়ে গাড়ির চাকা চলে গিয়েছে। এ বিষয়ে তাঁরা পুলিশের হাতে তথ্যপ্রমাণ তুলে দিতে চান। তাঁদের বক্তব্য, মৃত্যু হতে পারত ইন্দ্রানুজের। অভিযোগ, পাল্টা এই অভিযোগের তদন্ত খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।