• ট্রলিতে গোড়ালিকাটা দেহ নিয়ে ফেক নিউজ়, কে আছে নেপথ্যে!
    এই সময় | ০৪ মার্চ ২০২৫
  • কুমোরটুলি ঘাটে নীল ট্রলি ব্যাগের ভিতরে পিসিশাশুড়ির গোড়ালিকাটা দেহ উদ্ধারের ঘটনায় বৌমা ফাল্গুনী ঘোষ কেন তাঁকে খুন করতে গেলেন, সেই রহস্য উদ্ঘাটনে তখন ব্যস্ত পুলিশ অফিসাররা। সেই সময়েই ওই খুনের ঘটনা নিয়ে একটি ফেক নিউজ় ছড়ানো হলো সোশাল মিডিয়ায়!

    শুধু তা–ই নয়, যিনি ওই ভুয়ো খবর ছড়ালেন, তিনি ওই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক মোড়ক দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। একটি খুনের ঘটনাকে নিয়ে হঠাৎ এ ভাবে মিথ্যে খবর কে বা কারা, কেন ছড়াল? বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে রাজ্য পুলিশের সাইবার ক্রাইম উইং (সিসিডব্লিউ)।

    গত মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে সুমিতা ঘোষের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। প্রাতর্ভ্রমণকারীদের তৎপরতায় কলকাতা পুলিশ খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে সুমিতার বৌমা ফাল্গুনী এবং তাঁর মা আরতি ঘোষকে। নীল রংয়ের ওই ট্রলি ব্যাগের সঙ্গে মা–মেয়ের ধরা পড়ার মুহূর্তগুলো সেখানে উপস্থিত সাধারণ মানুষদের অনেকেই মোবাইল ফোনে ক্যামেরাবন্দি করেন।

    সেই সব ছবি ও ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় দ্রুত শেয়ার হতে শুরু করে। ওই ঘটনায় রাজনৈতিক বা সাম্প্রদায়িক যোগ এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাননি তদন্তকারীরা। অথচ গত কয়েক দিন ধরে সেই ঘটনাকে সামনে রেখে উস্কানিমূলক ভিডিয়ো পোস্ট করে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে, এমনটা পুলিশের বক্তব্য। ফেক ভিডিয়োটির উৎস ইতিমধ্যেই শনাক্ত করেছেন সিসিডব্লিউ–র অফিসাররা। পুলিশ সূত্রের খবর, খুশি নামে এক মহিলার ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে ভিডিয়ো পোস্ট করে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে।

    এই ধরনের ফেক নিউজ় বা বিতর্কিত ছবি–ভিডিয়ো পোস্ট করার ঘটনার মোকাবিলায় রাজ্য পুলিশের সাইবার ক্রাইম উইং বিশেষ পদক্ষেপ করছে। রাজ্যের প্রতিটি পুলিশ জেলা ও কমিশনারেটে ইউনিট গঠন করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে ৩৯টি ইউনিট। কলকাতা পুলিশের মতো রাজ্য পুলিশের সাইবার ক্রাইম উইং–এর নিজস্ব থানা তৈরির প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে নবান্নে।

    সূত্রের খবর, এখন চালু থাকা প্রতিটি ইউনিটকে প্রত্যেক মাসে গড়ে ৫ থেকে ১০টি ফেক নিউজে়র তদন্ত করতে হচ্ছে। যেমন, গত ফেব্রুয়ারিতে এক মহিলাকে সন্দেশখালিতে নিগ্রহ করা হয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে ফেসবুক পোস্ট করা হয়েছিল। অনুসন্ধান করে পুলিশ জানতে পারে, ওটা আসলে ২০১৮ সালের বারাসতের একটি ঘটনা।

    রাজ্য পুলিশের এডিজি–সাইবার ক্রাইম উইং হরি কিশোর কুসুমাকার বলেন, ‘কখনও ফেক ছবি–ভিডিয়ো আপলোড করে, আবার কখনও ডিপফেক–এর মাধ্যমে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সতর্ক না–থাকলেই বিপদ। একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা, অন্য দিকে অশান্তি বা গোলমালও হতে পারে।’

  • Link to this news (এই সময়)