এই সময়, বর্ধমান: পলাশের রূপের আগুনে চোখ সেঁকতে বসন্তে অনেকেই ছুটছেন বাঁকুড়া–পুরুলিয়ায়। অথচ পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে পিচ গলানোর মেশিনের আগুনে প্রায় ঝলসে গেল একটি পলাশ গাছ! গাছপ্রেমীদের চেষ্টায় এবং বিডিও–র হস্তক্ষেপে অবশ্য এ যাত্রায় রক্ষা পেয়েছে পলাশ ফুল ভর্তি সেই গাছটি।
ভাতার ব্লকের বিডিও অফিসের ঠিক সামনেই রয়েছে ওই গাছটি। সোমবার সকালে রাস্তা সংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার পলাশ গাছটির নীচেই মেশিন পিচ গলানোর কাজ শুরু করেছিলেন। সেখান থেকে গলা পিচ নিয়ে রাস্তা সারানোর কাজ করছিলেন তাঁর কর্মীরা।
আগুন ও কালো ধোঁয়ায় তখন পলাশ গাছের পাতারা মাথা নুইয়েছে। ঝরে পড়ছে পলাশ ফুল। এলাকার অনেকে বিষয়টি দেখলেও কেউ প্রতিবাদ করেননি। তবে স্থানীয় বাসিন্দা ধীমান রায় প্রতিবাদ জানান ঠিকাদারের কাছে। কিন্তু ধীমানের একক প্রতিবাদ কানে তোলেননি ওই ঠিকাদার।
পরে বিষয়টি জানার পর ‘এই সময়’–এর পক্ষ থেকে ভাতার ব্লকের বিডিও এবং জেলার গাছ গ্রুপের (গাছ বাঁচাতে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবীদের দল) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দ্রুত তাঁরা পদক্ষেপ করে মরতে বসা গাছটিকে বাঁচান।
ভাতারের বিডিও দেবজিৎ দত্ত বলেন, ‘বিষয়টি জানার পরেই ওই মেশিন সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। দ্রুত সরানো না হলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলার পর ঠিকাদার মেশিন সরিয়ে নিয়েছেন। এটা ওঁদের করা উচিত হয়নি।’ পূর্ব বর্ধমান জেলার গাছ গ্রুপের ভাতার এলাকার কো-অর্ডিনেটর আশিক শেখের বক্তব্য, ‘আমরা খবর পাওয়ার পর এখানে এসে ওই মেশিন না সরানো পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। এলাকার লোকেরাও আমাদের পাশে দাঁড়ান।’
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ‘গাছ-মাস্টার’ অরূপ চৌধুরী বলেন, ‘গাছ ছাড়া প্রকৃতি বাঁচবে না, আমরা বাঁচব না— এই বার্তাটা আমরা মানুষের মনে ছড়াতে পেরেছি সামান্যই। এটাকে আরও প্রচার করতে হবে।’