সৌমেন রায়চৌধুরী
পিসিশাশুড়িকে খুনে অভিযুক্ত ফাল্গুনী ঘোষের ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করতে মঙ্গলবার মধ্যমগ্রামের বীরেশপল্লি এলাকায় একটি পুকুরে ডুবুরি নামায় পুলিশ। সেই অস্ত্র মিনিট ১৫-র মধ্যে উদ্ধারও হয়। কিন্তু সেই সময়েই ইতি-উতি ভেসে আসতে থাকে অনুরোধ। পুলিশের নামানো ডুবুরির কাছে গিয়ে এক মহিলা অনুরোধ করেন, ‘আমার সোনা এবং রুপোর আংটিটা পুকুরে হারিয়ে গিয়েছিল। একটু খুঁজে দেবেন প্লিজ।’ যা শুনে প্রথমে খানিক থমকে গিয়েছিলেন তাঁরা। পরে যদিও বিনা বাক্যব্যয়ে ঘটনাস্থল ছাড়েন তাঁরা।
মধ্যমগ্রাম পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বীরেশপল্লি এলাকায় ঘটে যাওয়া রোমহর্ষক খুনের ঘটনায় শোরগোল পড়েছে গোটা রাজ্যে। পিসিশাশুড়িকে খুন করে ট্রলিতে পুরে গঙ্গায় ফেলার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে ফাল্গুনী এবং তার মা আরতি ঘোষের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে অভিযুক্তদের নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন মধ্যমগ্রাম থানার তদন্তকারীরা। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা জানান, বাড়ির পাশেই পুকুরেই খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র ফেলে মা-মেয়ে। এরপরেই ডুবুরি দলকে পুকুরে নামায় পুলিশ। উদ্ধার হয় বঁটিও।
এ দিকে পুকুরে ডুবুরি নামবে জানতে পেরেই আশার আলো দেখেন স্থানীয় বাসিন্দা শীলা বসু। পুলিশের ঘেরাটোপ এড়িয়ে ডুবুরির কাছে গিয়ে তিনি অনুরোধ করেন, এই পুকুরেই হারিয়ে যাওয়া তাঁর সোনার আংটি এবং একটি রুপোর আংটি উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য।
তিনি জানান, কালীপুজোয় তিনি পুরোহিতকে ওই আংটি দিয়েছিলেন, যা ওই পুরোহিত ভুল করে পুজোয় ব্যবহৃত ঘটে রেখে দেন। পরবর্তীতে পুজো শেষে ঘট বিসর্জন দেওয়া হয় পুকুরেই। সেই সময়েই ভুলবশত সেই আংটিগুলিও পুকুরে পড়ে যায়। বহু খোঁজাখুঁজির পরও মেলেনি সেই দামী গয়নাগুলি। ফলে ট্রলিকাণ্ডের জন্য পুকুরে ডুবুরি নামায় আশার আলো দেখতে পান শীলা। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র মিনিট ১৫-র মধ্যে উদ্ধার হয়ে গেলেও সেই গয়না অবশ্য উদ্ধার হয়নি। কিছুক্ষণ পরে আশাহত হয়ে বাড়ি ফিরে যান শীলা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিনি বললেন, ‘গয়না তো আর পেলাম না, দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করি আর কী!’