এই সময়, তমলুক: সোমবার থেকে শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ হাজার করে ট্যাবের টাকা পাওয়ার পরেও জেলায় প্রায় দু’হাজার পরীক্ষার্থী বসেনি পরীক্ষায়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ হাজার ১৬৪ জন।
জেলা শিক্ষা দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে এ জেলায় ট্যাব কেনার টাকা পেয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের ৩২ হাজার ২৪৮ জন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার আগে রেজিস্ট্রেশনের পর ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের মাথা পিছু ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও প্রায় দুই হাজার ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় না বসায় উদ্বিগ্ন শিক্ষা দপ্তরের কর্তারা।
এ ছাড়া, ট্যাবের টাকা নিয়েও পরীক্ষা দেয়নি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ৩০০ জন এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় প্রায় ১৫০ জন পরীক্ষার্থী। যদিও এই বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, বেশ কিছু ছাত্রের পরিবারে আর্থিক অনটন থাকায় সেই ছাত্রেরা ভিন রাজ্যে কাজের জন্য পাড়ি দিয়েছে। পাশাপাশি, বেশ কিছু ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে।
জেলায় কুলবেড়িয়া ভীমদেব আদর্শ বিদ্যাপীঠে ৩০৮ জন ছাত্রছাত্রী ট্যাব কেনার টাকা পেলেও পরীক্ষায় বসেছে ২৮৮ জন। বহিচবেড়িয়া হাইস্কুলে ৬৩ জন ট্যাব কেনার টাকা পেলেও পরীক্ষায় বসেছে ৫৯ জন। ময়না আদর্শ বিদ্যায়নে দ্বাদশ শ্রেণির মোট ১১৩ জন ট্যাব কেনার টাকা পেলেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে ১০১ জন।
এ ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে আরও কিছু স্কুল। কুলবেড়িয়া ভীমদেব আদর্শ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজ সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়ার পরেও ছাত্রীরা পালিয়ে বিয়ে করছে। পারিবারিক আর্থিক সমস্যা থাকার কারণে বেশ কিছু ছাত্র ভিন রাজ্যে কাজের জন্য পাড়ি দিয়েছে। মানুষের মধ্যে এখনো সচেতনতার অভাব রয়েছে।’
জেলা পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বিদ্যালয় পলাশ রায় বলেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিকের যে সংখ্যক ছাত্রছাত্রী ট্যাব পেয়েছে তার থেকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশ কিছুটা কম রয়েছে। শুনেছি কিছু ছাত্র বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়ে গিয়েছে। তারাই পরীক্ষা দেয়নি।’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ অপর্ণা ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রায় দু’হাজার পরীক্ষার্থী এ বছর রেজিস্ট্রেশন করার পরেও পরীক্ষা দেয়নি। তবে এই মুহূর্তে সঠিক কারণ বলতে পারছি না। আশা রাখছি, আগামী দিনে সরকার বিষয়টা তদন্ত করবে।’