এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রত্যেক কেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থা রেখেছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। মূলত মোবাইল নিয়ে কেউ যাতে ঢুকতে না পারে তাই এই ব্যবস্থা। তা সত্ত্বেও এক পরীক্ষার্থী মোবাইল-সহ ধরা পড়ল সোমবার, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনই। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, উত্তর চব্বিশ পরগনার কামারহাটি হাই স্কুলের ছাত্রের পরীক্ষার সিট পড়েছিল কামারহাটি সাগর দত্ত ফ্রি হাই স্কুলে। পরীক্ষা চলাকালীন তার কাছে মোবাইল মেলে। চিরঞ্জীব বলেন, “ওই পরীক্ষার্থীর সব পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। মেটাল ডিটেক্টর থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে ওই পরীক্ষার্থী ফোন নিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করলেন, স্কুলের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।”
প্রশ্নপত্র যেন কোনও ভাবেই ফাঁস না হয়, তা নিশ্চিত করতে ‘রিভার্স জ্যাকেট’ নামে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। চিরঞ্জীব জানান, ‘রিভার্স জ্যাকেট’ ব্যবস্থায় পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পরে দেখবেন সেটির প্রথম ও শেষ পাতা জোড়া লাগানো রয়েছে। ওই জোড়া পাতা স্কেল বা পেনসিল দিয়ে খুলতে হবে। তিনি বলেন, “কোনও স্তরেই যেন প্রশ্ন কেউ খুলতে না পারে, তাই এই ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে প্রশ্নের প্রত্যেক পাতায় কিউআর কোড তো রয়েছেই।”
জেলায় জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম দিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বাংলা প্রশ্নপত্র নিয়ে খুশি অধিকাংশ পরীক্ষার্থী। পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকেরা নজরদারি করেছেন। বীরভূম ও বাঁকুড়ায় কয়েক জন পরীক্ষার্থী অসুস্থ থাকায় হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দেন। নদিয়ার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর সূত্রে খবর, প্রথম দিনে ৬২৬ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। যার বেশির ভাগই ছাত্রী।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে উচ্চ মাধ্যমিক নির্বিঘ্নেই হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের কালচিনির হাসিমারা এলাকায় একটি পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রায় ৫০০ মিটারের মধ্যে দেখা যায় ১৬টি হাতিকে। সেগুলিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠান বনকর্মীরা। বাঁকুড়ার হাতি উপদ্রুত এলাকায় বন দফতর ও প্রশাসনের তরফে গাড়ির ব্যবস্থা ছিল।
যাদবপুর-কাণ্ডের আঁচ পড়ে নারায়ণ দাস বাঙ্গুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুলে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই স্কুলের প্রাক্তনী। এই স্কুলে এ বার উচ্চমাধ্যমিকের সিট পড়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, স্কুলের সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী কালো ব্যাজ পরে এসেছেন এবং সেখানে লেখা রয়েছে ‘ছিঃ’। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “যাদবপুরে যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আমাদের স্কুলের প্রাক্তনী। আমরা সব সময় প্রাক্তনীর পাশে দাঁড়াই। তাই প্রত্যেকেই ‘ছিঃ’ লেখা ব্যাজ পরেছি।”