কলকাতা পুরসভার সদর দফতরের চার দিকে ১০০ মিটার এলাকা বেআইনি হকারমুক্ত করতে হবে। গত বছর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে টাউন ভেন্ডিং কমিটি (টিভিসি) বেআইনি হকার সরাতে উদ্যোগী হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, কয়েক মাস না পেরোতেই নিউ মার্কেট এলাকার বিভিন্ন অংশে মূল রাস্তার উপরেই হকারেরা বসতে শুরু করে দিয়েছেন। সোমবার নিউ মার্কেটে সাংবাদিক সম্মেলন করে বেআইনি হকার-রাজের বিরুদ্ধে সরব হল হকার সংগ্রাম কমিটি। পিচ রাস্তার উপরে বেআইনি হকারদের বসার ঘটনায় মূলত পুলিশি অসহযোগিতাকেই দায়ী করল তারা।
এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে হকার সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক শক্তিমান ঘোষের অভিযোগ, ‘‘আমরা হঠাৎ দেখতে পাচ্ছি, নিউ মার্কেটের বারট্রাম স্ট্রিটের পিচের রাস্তায় ১৫-২০ জন হকার বসে পড়েছেন। আমরা নিউ মার্কেট থানায় এ নিয়ে বার বার অভিযোগ করেছি। মুখ্যমন্ত্রী আগেই বৈঠক করে জানিয়েছেন, মূল রাস্তায় হকার বসানো যাবে না। পিচের রাস্তা খালি করতে বললেও নিউ মার্কেট থানার পুলিশ পুরোপুরি উদাসীন। পুলিশ আসার আগে হকারেরা সরে যাচ্ছেন। পুলিশ এলাকা ছেড়ে চলে যেতেই ফের তাঁরা বসে যাচ্ছেন। আমরা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ভীষণ অসন্তুষ্ট। নিউ মার্কেটে হকারদের কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত হয়ে চাঁদনি চক, রাজাবাজারেও পিচের রাস্তা হকারেরা দখলে নিয়ে নিয়েছেন।’’ হকার সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক দেবাশিস দাসের অভিযোগ, ‘‘মাস দুয়েক আগে নিউ মার্কেটের পিচের রাস্তা থেকে হকার সরাতে মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিউ মার্কেট থানার ওসিকে ডেকে জানিয়েছিলেন, তিন দিনের মধ্যে হকার সরাতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, হকারদের অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’
নিউ মার্কেটের রাস্তায় হকার বসার চিত্রে যে কোনও বদল হয়নি, তা স্বীকার করে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘মূল রাস্তা থেকে হকারদের সরাতে পুলিশকে বার বার বলেও কাজ হয়নি। আমি এ বিষয়ে নগরপালকে চিঠি দিয়েছিলাম। ফের তাঁকে এ বিষয়ে মনে করাব।’’ যে ভাবে হকারদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে, তাতে হকার নিয়ন্ত্রণে পুরসভার টাউন ভেন্ডিং কমিটির থাকা আর না থাকা সমান বলেও অভিযোগ তুলেছেন হকার সংগ্রাম কমিটির নেতা শক্তিমান।
নিউ মার্কেট থানার অসহযোগিতার কথা বিস্তারিত জানিয়ে গত শনিবার কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছে হকার সংগ্রাম কমিটি। এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে ডিসি (সেন্ট্রাল)-কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘চিঠি পেয়েছি। আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করছি।’’