অর্ঘ্য বিশ্বাস, গজলডোবা
শিলিগুড়ি থেকে গজলডোবার দূরত্ব মেরেকেটে ২৫ কিলোমিটার। ভোরের আলো থানা এলাকার গজলডোবা এখন প্রতিদিন ভিড়ে ঠাসা। শীত পার হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে শুধু স্থানীয়রা নন, বাইরে থেকে প্রচুর পর্যটক বেড়াতে আসেন এখানে।
নৌকাবিহার ছাড়াও ভোরের আলো সেতুতে ভ্রমণ, পাখিবিতানের ধারে বসে প্রকৃতির শোভা দেখেন তাঁরা। অভিযোগ, ইদানীং নোংরা ফেলে সেই গজলডোবাকে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পরিণত করেছেন পর্যটকদের একাংশ।
আবর্জনায় ছেয়ে গিয়েছে গজলডোবার বিস্তীর্ণ এলাকা। পরিযায়ীদের বিচরণভূমির গা–ঘেঁষে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। খাওয়া শেষে যত্রতত্র ফেলে রাখা হচ্ছে প্লাস্টিকের গ্লাস, জলের বোতল–সহ খাবারের উচ্ছিষ্ট। পাখিবিতানের গা ঘেঁষে এ ভাবে নোংরা ফেলায় দুর্গন্ধে ভরেছে এলাকা। নজরদারি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
সোমবার সপরিবারে গজলডোবা ভ্রমণে এসেছিলেন লাটাগুড়ির বাসিন্দা বিরাজ চন্দ। পাখিবিতানের ধারে বসার জায়গায় গিয়ে চটে যান তিনি। মিনিট পাঁচেক দাঁড়িয়ে চলে আসেন এলাকা ছেড়ে।
তিনি বলেন, ‘বিরাট জায়গা জুড়ে জমে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। অনেকেই বেড়াতে এসে খাওয়া দাওয়া শেষে প্লাস্টিকের থালা–বাটি ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন। এটা কি সভ্যতা।’ নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর যুক্তি, ‘সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে এলাকায় নজরদারি করা হোক।’
ডুয়ার্সের বাসিন্দা তথা পরিবেশপ্রেমী সুজিত দাস বলেন, ‘সকলেই ছুটির দিনে গজলডোবায় বেড়াতে ভালোবাসেন। কিন্তু কিছু মানুষ যে ভাবে গজলডোবার পরিবেশ নষ্ট করছে তা সত্যিই চিন্তার। যে এলাকায় নোংরা ফেলা হচ্ছে সেই এলাকার গা ঘেঁষেই রয়েছে পরিযায়ী পাখিদের বিচরণক্ষেত্র। খাবার পড়ে থাকায় পাশের সরস্বতীপুর জঙ্গল থেকে বাইরে বেরিয়ে আসছে বানরের দল। তারা উৎপাত করছে। সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হওয়া উচিত।’
কয়েক আগে গজলডোবায় পাখিবিতানের পাশে বসার জন্য ব্যবস্থা করে প্রশাসন। সেখানে বসেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখেন সকলে। কখনও ছবি তুলে, গল্প করে সময় কাটান। শিলিগুড়ির কাছে এমন সুন্দর জায়গার টানে ছুটে আসেন পর্যটকরা। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষ সেই এলাকা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পরিণত করেছেন। শুধু এখানেই নয়, ভোরের আলো সেতুর দুই প্রান্ত জুড়ে যত্রতত্র জমেছে আবর্জনা। গজলডোবা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায় বলেন, ‘ওই জায়গা পরিদর্শনের পরে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’