যাদবপুর কাণ্ডে বিচারবিভাগীয় তদন্তের প্রস্তাব উপাচার্যের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৪ মার্চ ২০২৫
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটা অপ্রীতিকর ঘটনার প্রেক্ষিতে এবার নড়েচড়ে বসল কর্তৃপক্ষ। ওই ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের প্রস্তাব দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন ভাস্করবাবু। জুটা, ওয়েবকুপা, ওয়েবকুটা-সহ চারটি শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা সেই বৈঠকে যোগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরাও বৈঠকে ছিলেন। শনিবারের ঘটনা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এছাড়া ছাত্র সংসদ নির্বাচন, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার বিষয়েও কথা হয়েছে বৈঠকে।
অসুস্থতার কারণে বৈঠকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। তিনি সমস্ত পক্ষের বক্তব্য শোনেন। বৈঠকেই শনিবারের ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের প্রস্তাব গৃহীত হয়। ক্যাম্পাসে শান্তি এবং স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে মঙ্গলবারের বৈঠকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি মাথায় রেখে রাজ্য সরকারের কাছে অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষীর আবেদন জানানো হয়েছে। ক্যাম্পাসে শান্তি ফেরাতে সকলকে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন উপাচার্য। এদিকে এই বৈঠক নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছে এসএফআই। তাদের প্রশ্ন, উপাচার্য কেন ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলছেন না?
গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হেনস্থার শিকার হন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীন জখম হন ব্রাত্য বসু। শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো দুই পড়ুয়াও জখম হন বলে দাবি বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের। অভিযোগ, দুই পড়ুয়ার মধ্যে এক জনকে চাপা দিয়েছে মন্ত্রীর গাড়ি। অন্য জনের পায়ের উপর দিয়ে গাড়ির চাকা চলে গিয়েছে। এই দুই ঘটনায় নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ওইদিন রাতে ক্যাম্পাসের তৃণমূল সমর্থিত কর্মী সংগঠন ‘শিক্ষাবন্ধু’র অফিসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবারের বৈঠকে ছাত্রের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগে এফআইআর দায়েরের দাবি ওঠে। যদিও এই নিয়ে আপত্তি তোলে শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা। সংগঠনের সদস্যরা ‘শিক্ষাবন্ধু’র অফিসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তের দাবি তোলেন। ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত বলেন, কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে চায়। সেই নিয়েই আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শনিবারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রয়োজন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের সঙ্গে কথা না বলায় ক্ষুব্ধ এসএফআই নেতৃত্ব। উপাচার্য তাঁদের সঙ্গে কথা না বললে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসার হুশিয়ারি দিয়েছে এসএফআই নেতা শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।