• হালতুতে মা-বাবা-ছেলের রহস্যমৃত্যুতে মামা-মামি গ্রেপ্তার
    এই সময় | ০৫ মার্চ ২০২৫
  • ট্যাংরার পর হালতুতে হাড়হিম করা ঘটনায় কসবা থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার নিহতের মামা, মামি। নিহত সোমনাথ রায়ের শ্যালিকা ও শ্বশুরের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রদীপকুমার ঘোষাল ও নীলিমা ঘোষালকে। তাঁদের অভিযোগ, সোমনাথ ও তাঁর স্ত্রী সুমিত্রাকে সম্পত্তি নিয়ে নানা ভাবে মানসিক চাপ দিতেন এই মামা, মামি। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সকালে একই ঘর থেকে উদ্ধার হয় সোমনাথ, সুমিত্রা ও তাঁদের আড়াই বছরের ছেলে রুদ্রনীলের ঝুলন্ত দেহ। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে কি সম্পত্তিগত কোনও টানাপোড়েন নাকি ধারদেনা ও প্রবল মানসিক চাপ রয়েছে, উঠছে সে প্রশ্নও। মৃত সোমনাথ রায় তাঁর মামার বাড়িতে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে থাকতেন। এ দিন হালতু পূর্বপল্লির সেই বাড়ি থেকেই দেহ উদ্ধার হয় তিন জনের।

    মামার বাড়িতে থাকলেও সোমনাথ থাকতেন তাঁর মায়ের ভাগের জায়গায়। অর্থাৎ উত্তরাধিকার সূত্রে তাঁর মা যা পেয়েছিলেন, সেখানেই সোমনাথ তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা ও আড়াই বছরের ছেলে রুদ্রনীলকে নিয়ে থাকতেন। সোমনাথের শাশুড়ি এ দিন সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, জায়গা জমি নিয়ে মেয়ে ও মেয়ে জামাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা ছিল।

    সোমনাথের শ্যালিকারও দাবি, জমির জন্য তাঁর বোনকে মরতে হলো। শ্বশুর জানান, এই জায়গা নিয়ে তিন চার বছর ধরে মেয়ে, জামাইকে অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। সোমনাথ ঘরের দেওয়ালে যে সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছেন, সেখানেও মামা, মামির কথা উল্লেখ করেছেন।

    কিন্তু এলাকার লোকজনের দাবি একেবারেই উল্টো। প্রতিবেশীরা জানান, মামার বাড়ি থেকে কী দেওয়া হয়নি? অটো থেকে চার চাকা, সব কিনে দিয়েছে। কিন্তু সবই বিক্রি করে দিয়েছে। সোমনাথ সম্প্রতি একটি ফ্ল্যাটও কিনেছেন বলে এলাকার লোকজনের মুখে শোনা গিয়েছে এ দিন। মাঝে মধ্যেই পাওনাদারও হানা দিতেন বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

    সোমনাথের মামিরও দাবি, বাজারে দেনা করে ফেলেছিলেন। পাওনাদাররা এসে তাগাদা দিত। সোমনাথের মামাও জানান, তাঁর আরেক বোন ওই ভাগ্নের কাছেই থাকেন। সেই বোনের সমস্ত পেনশনের টাকাও ওই ভাগ্নেই তুলতেন। এরই মধ্যে এই ঘটনা।

    ঘটনা খতিয়ে দেখছে কসবা থানার পুলিশ। তবে এ দিন রায় বাড়িতে যে দৃশ্য দেখা গিয়েছে, তা রীতিমতো শিউরে ওঠার মতোই। শাড়ির ফাঁসে বাবা ঝুলছেন আড়াই বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে, পাশে ঝুলছেন মা।

  • Link to this news (এই সময়)