মিল্টন সেন, হুগলি: সূচনা ঘটল অলচিকি শতবর্ষের। সাঁওতাল ভাষাকে সন্মান জানিয়ে হুগলি জেলা পরিষদে কর্মাধ্যক্ষর ঘরে ঝোলানো হল সাঁওতালি ভাষায় নেমপ্লেট। অলচিকি হল সাঁওতালি ভাষার হরফ। এবছরই শতবর্ষে পদার্পণ করেছে সেই অলচিকি। ভারতের সংবিধান স্বীকৃত ভাষা এই সাঁওতালি ভাষা। আজও জেলা হুগলির একাধিক মানুষের মাতৃভাষা সাঁওতালি। সেই আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বিজন বেসরা।
গত গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে ধনেখালি থেকে জিতে জেলা পরিষদের সদস্য হয়েছেন বিজন। সম্প্রতি তাঁর ঘরের সামনে নেমপ্লেটে বাংলা হরফের পাশাপাশি অলচিকি হরফে লেখা হয়েছে তাঁর নাম এবং পদ। এই প্রসঙ্গে বিজন বলেছেন, এবছরই অলচিকি হরফের শতবর্ষ পূরণ হচ্ছে। তিনি আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি। তাই তাঁর নেমপ্লেটে অলচিকি লিখে শতবর্ষের সূচনা করেছেন। তিনি চান যেসব জায়গায় আদিবাসী মানুষের সংখ্যা বেশি, সেখানে স্কুল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও অলচিকিতে যাতে লেখা হয়। আর প্রয়োজনে সেই কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট জায়গায় তিনি দরবার করতে প্রস্তুত।
হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধারা বলেছেন, কর্মাধ্যক্ষ বিজন বেসরা অনুরোধ করেছিলেন, তাই তাঁর নেমপ্লেট অলচিকি লিপিতে লেখা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর সাঁওতালি ভাষাকে দ্বিতীয় সরকারি ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। বর্তমানে জেলার একাধিক স্কুল কলেজে অলচিকি পড়ানো হয়। হুগলি জেলা পরিষদ সেই ভাষাকে সম্মান জানায়, তাই এই কাজ করেছে। এই প্রসঙ্গে সাঁওতালি ভাষার গবেষক শুভজিৎ মূর্মু জানিয়েছেন, পন্ডিত রঘুনাথ মূর্মু সাঁওতালি ভাষার লিপি আবিষ্কার করেছিলেন। এটি একটি অস্টিক ভাষা। ভারতে যত আদিবাসী আছে তার মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম ভাষা হল সাঁওতালি। এই ভাষা শতবর্ষে পদার্পণ করেছে। তাই মিশন অলচিকির মাধ্যমে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় প্রচার চলছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে দাবি পেশ করা হচ্ছে। অনুরোধ করা হচ্ছে যাতে অলচিকিতে লেখা হয়। তাঁদের তরফে দাবি করা হচ্ছে বিশেষ করে সাঁওতাল প্রধান এলাকায় থাকা স্টেশনগুলিতে অলচিকিতে লেখা ও ঘোষণা করা হোক।