ভুয়ো ওয়েবসাইট বানিয়ে কোটি কোটি টাকা তোলেন কুন্তলরা! নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর দাবি সিবিআইয়ের
প্রতিদিন | ০৫ মার্চ ২০২৫
গোবিন্দ রায়: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট সিবিআইয়ের। চাকরি দেওয়ার নামে বানানো হয়েছিল, একাধিক ভুয়ো ওয়েবসাইট। সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নাকি কোটি কোটি টাকা তোলা হয়েছে। আদালতে রিপোর্ট জমা দিয়ে এমনই দাবি করল সিবিআই।
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, অযোগ্য, অকৃতকার্য প্রার্থীদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে। এমনকী ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি, পরীক্ষায় সাদা খাতা জমা দিয়ে এসে বেআইনিভাবে চাকরি করছেন, এমন প্রার্থীর কথাও উল্লেখ রয়েছে সিবিআইয়ের রিপোর্টে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নামে অতিরিক্ত প্যানেল তৈরি করেও অযোগ্য প্রার্থীদের জায়গা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
এদিন কলকাতা হাই কোর্টে জমা দেওয়া সিবিআই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, কুন্তল ঘোষ ও তাপস মণ্ডল মিলে টাকার বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দিয়েছিলেন। এই দু’জনের আঁতাতে মোটা অঙ্কের টাকা তোলা হয়। সিবিআইয়ের দাবি, ৬ বছরে (২০১৬-২০২২) ১৪১ জন প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় ৪ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছে তারা। এজেন্টদের মাধ্যমে এই টাকা তোলা হয়েছিল। চাকরি দেওয়ার নাম করে কুন্তল ঘোষ ৩ কেটি ১৩ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আরও দাবি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নামে একাধিক ওয়েবসাইট বানিয়েছিলেন কুন্তল। এজেন্টদের মাধ্যমে চাকরি প্রার্থীদের থেকে তোলা টাকা পৌঁছত কুন্তল ঘোষের কাছে।
সিবিআই রিপোর্টেই জানা গিয়েছে, যে সমস্ত প্রার্থীরা ২০১৫ সালের টেট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছিলেন, তাঁদেরকে কৃতকার্য দেখানো হয়েছে। ৪২ হাজারের বেশি নিয়োগ হয়েছিল। এই নিয়োগে ৭৫২ জন প্রার্থীর ফল প্রকাশ না করে আটকে রাখা হয়েছিল ইচ্ছাকৃতভাবে। পরে দেখা যায় এই ৭৫২ জনই ভুয়ো প্রার্থী। তাদের মধ্যে ৩০০ জনের বেশি প্রার্থীকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। পাশপাশি ২০১৫ সালের ওএমআর প্রস্তুতকারী সংস্থা এস বসুরায় এণ্ড কোম্পানি কোনও নির্দেশ ছাড়াই প্রার্থীদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং ওএময়ার শিট নষ্ট করে দেয় বলে রিপোর্টে দাবি করেছে সিবিআই।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের নিয়োগ নিয়ে গত সপ্তাহে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এমনকী প্রয়োজনে ৪২ হাজার প্রার্থীর নিয়োগ বাতিল করা হতে পারে বলেও জানান তিনি । তিনি সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, এখন পর্যন্ত তারা কী তদন্ত করেছে তা জানাতে। সেই রিপোর্টই আজ পেশ করল সিবিআই।