• বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে গাড়ির ধাক্কা, মৃত ১
    বর্তমান | ০৫ মার্চ ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: ঝা চকচকে রাস্তাই হল কাল। সোমবার গভীর রাতে গাছের সঙ্গে বিয়ে দিতে যাওয়ার সময়ে ১৯ জনকে পরপর ধাক্কা মারল দ্রুতগতিতে আসা পিক আপ ভ্যান। তারমধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত যুবকের নাম শ্যাম টুডু (৩০)। তাঁর বাড়ি পাঁচকুড়ি এলাকায়। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম ১১ জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার পাঁচকুড়ি এলাকায়। ঘটনায় জখম সালমা টুডু, সোনালী হাঁসদা, খাদি সোরেন ও মুখী টুডুকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপতালে স্থানান্তরিত করা হয়। চিতা টুডু আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি। ৩ জনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন খড়গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন রায়। জেলার পুলিস সুপার ধৃতিমান সরকার গুরুতর জখমদের কলকাতায় পাঠানোর জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেন। মেদিনীপুর পুরসভা দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের জন্য মা ক্যান্টিনের মাধ্যমে খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়। মঙ্গলবার স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান। বিধায়ক দীনেন রায় বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। একজনের অবস্থা খুব খারাপ। বাকিদের চিকিৎসা চলছে। পরিবারের পাশে সর্বদা আছি। 


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে পাঁচকুড়ি এলাকায় আদিবাসী পরিবারের বিয়ে ঘিরে মেতে উঠেছিল গ্রামবাসীরা। জানা গিয়েছে, বিয়ের রীতি মেনে প্রথমে আম গাছের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। সেইমতো সোমবার গভীর রাতে গ্রামবাসীরা একত্রে গাছের সঙ্গে বিয়ে দিতে যাচ্ছিল। রাস্তার ধার বরাবরই তারা যাচ্ছিল। সেই সময় পাথরার দিক থেকে একটি পিক আপ ভ্যান দ্রুতগতিতে আসছিল। আচমকা ভ্যানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিয়েবাড়িতে আসা গ্রামবাসীদের ধাক্কা মারতে শুরু করে। পিক আপ ভ্যানের ধাক্কায় রাস্তার ধারে সকলেই লুটিয়ে পড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসে। কোনওক্রমে গ্রামবাসীদের উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুর্ঘটনায় জখমদের মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শ্যামকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার সকালে গ্রামের বাকি সদস্যরা রাস্তা অবরোধ করেন। ঘণ্টাখানেক ধরে অবরোধ চলে। পরে পুলিস ও প্রশাসনের চেষ্টায় অবরোধ ওঠে। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 


    স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, পাঁচকুড়ি থেকে পাঁচড়া পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার হয়েছে। রাস্তা সংস্কারের পরেই গাড়ির গতি বেড়েছে। দুর্ঘটনাস্থলে অন্ধকার থাকায় পিক আপ ভ্যানের চালক গ্রামবাসীদের দেখতে পাননি। মৃতের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তায় আলো লাগানো খুবই প্রয়োজন। তৃণমূলের মেদিনীপুর সদর ব্লকের সভাপতি মুকুল সামন্ত বলেন, পরিবারের পাশে আছি। এভাবে দুর্ঘটনা ঘটে যাবে ভাবতে পারিনি। পাঁচকুড়ি এলাকার বাসিন্দা সুদেব মণ্ডল বলেন, পিক আপ ভ্যানে সব্জি নিয়ে যাচ্ছিল। রাতে গাড়ির গতিবেগ বেড়ে যায়। পুলিসের কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
  • Link to this news (বর্তমান)