বাংলার বাড়ি তৈরির জন্য বাড়ছে চাহিদা, অবৈধ বালির ব্যবসা রমরমা
বর্তমান | ০৫ মার্চ ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: জোরকদমে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ঘর বানানোর কাজ শুরু করেছেন উপভোক্তারা। এজন্য ইট, পাথরের পাশাপাশি বালির চাহিদাও তুঙ্গে উঠেছে। আর সেই সুযোগে মোটা টাকা কামাতে অবৈধ বালির কারবার শুরু হয়েছে রামপুরহাটে। সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাস্তার ধারে বালি মজুত করে চড়া দামে চলছে অবৈধ কারবার। অথচ শীতঘুমে প্রশাসন।
মাসখানেক আগে বীরভূমে বালি পাচার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই পাচার রোধে তৎপরতা বাড়িয়ে তোলে পুলিস প্রশাসন। খোদ জেলাশাসক গভীর রাতে অবৈধ বালি ঘাটগুলিতে অভিযান চালান। তেমনি একাধিক জায়গা থেকে বালি ভর্তি পিকআপ ভ্যান, ট্রাক্টর, ডাম্পার আটক করা হয়েছে। জরিমানার পাশাপাশি কেসও করছে পুলিস। কিন্তু তারপরও অবৈধ বালি কারবারে পুরোপুরি রাশ টানতে পারেনি প্রশাসন।
গত ডিসেম্বরের শেষে রাজ্য সরকার বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা দিয়েছে উপভোক্তাদের। সেই টাকা পাওয়ার পর কাজও শুরু করেছেন বাসিন্দারা। ইট, পাথরের সঙ্গে পাকা ঘর তৈরির জন্য লাগছে বালি। চাহিদা ব্যাপক থাকায় তার সুযোগ নিচ্ছে বালি মাফিয়ারা। সূত্রের দাবি, বিভিন্ন নদনদী থেকে অবৈধ উপায়ে বালি নিয়ে এসে রাস্তার ধারে মজুত করছে এক শ্রেণির মানুষ। পরে সেখান থেকে চড়া দামে বালি বিক্রি করা হচ্ছে। কাউকে গভীর রাতে, কারও বাড়িতে ভোরে গাড়ি ভর্তি বালি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
ভূমি দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, অনুমতি সাপেক্ষে বৈধ ঘাট থেকে বালি তুলে মজুত করা যেতে পারে। তবে রাস্তার অন্তত ২০০ মিটার দূরে বালি মজুত করতে হবে। এছাড়া নিজের জায়গার সমস্ত কাগজপত্র দিয়ে বৈধ বালির কারবারিরা সরকারের কাছে আবেদনের ভিত্তিতে বালি মজুত করতে পারেন। তার জন্য বাড়তি রাজস্বও দিতে হয়। অথচ সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রামপুরহাটের শ্রীফলা থেকে বৈধরা পর্যন্ত রাস্তার ধারে উঁচু ঢিবি করে বালি মজুত করা হচ্ছে। ফলে বালি তোলা বা মজুত করার সময় রাস্তায় যে বালি পড়ছে, তা না সরানোয় মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তার ধারে কোনওরকম ইমারতি সামগ্রী মজুত করে রাখা যাবে না বলে পুরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়। কিন্তু ওইটুকুই। এর বাইরে সেভাবে কঠোর পদক্ষেপ চোখে পড়ে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তাঁরা বলেন, অনেক সময় প্রভাবশালী প্রমোটাররাও রাস্তার ধারে ইমারতি সামগ্রী মজুত রাখছে। যদিও পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন ভকত বলেন, শুধু রাজ্য সড়ক নয়, জাতীয় সড়কেরও ধারেও বালি মজুত করা হচ্ছে। আমরা এর আগে মাইকিংয়ের পাশাপাশি বালি বাজেয়াপ্তও করেছি। কিন্তু মুশকিল হল, পুলিস প্রশাসন যদি নজর না দেয়, তাহলে পুরসভার পক্ষে সীমিত লোক নিয়ে অভিযান চালানো তো সম্ভব নয়। তাছাড়া বাজেয়াপ্ত করা বালি বা ইট আমরা কোথায় রাখব? তাই পুলিস প্রশাসনকেও নজরদারি বাড়াতে হবে।
অন্যদিকে রামপুরহাট ১ ব্লকের বিএলএলআরও নীলেশ্বর ভট্টাচার্য বলেন, রাস্তার ধারে এভাবে বালি মজুত করা যায় না। বিষয়টি দেখছি।