• প্রসূতিদের হঠাৎ তীব্র শ্বাসকষ্ট, তদন্ত শুরু 
    বর্তমান | ০৫ মার্চ ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হঠাৎ প্রসূতিদের শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার ঘটনায় তদন্তে নামল স্বাস্থ্যদপ্তর। শুধু অ্যান্টিবায়োটিকের রি-অ্যাকশন, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে সেই রিপোর্ট স্বাস্থ্যদপ্তর চেয়ে পাঠিয়েছে। 


    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে আটজন প্রসূতির হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। প্রসূতি বিভাগে ভর্তি থাকা অন্যান্য রোগীরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের ডেকে পাঠানো হয়। তারা পরিস্থিতি সামাল দেয়। আটজন প্রসূতির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তবুও বিষয়টি হালকা করে দেখতে নারাজ স্বাস্থ্যদপ্তর। কয়েক দিন আগে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্যালাইনকাণ্ডের পর থেকেই চিকিৎসকদের সতর্ক করা হয়। বিশেষ সংস্থার ওই স্যালাইনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল। এক্ষেত্রেও বিশেষ কোনও ওষুধ প্রয়োগে সমস্যা হয়েছে কি না তা দেখা হচ্ছে। 


    বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে, এই ঘটনায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সকলেই সুস্থ রয়েছে। এক চিকিৎসক বলেন, প্রথমে দু’জন প্রসূতির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে বাকিরাও একই সমস্যায় ভুগতে থাকেন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি তাপস ঘোষ বলেন, বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। এক্ষেত্রেও তেমন কিছু হয়েছিল। তবে, কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এক রোগীর আত্মীয় বলেন, প্রসূতি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। একটি ওষুধ দেওয়ার পরই সমস্যা শুরু হয়। একাধিক চিকিৎসক ওয়ার্ডে আসেন। তাঁরা অন্য ওষুধ দেওয়ার পর সকলের শারীরিক অবস্থা উন্নত হয়। 


    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রিন্সিপাল ঩সেক্রেটারি বর্ধমানে এসে প্রসূতি বিভাগের প্রশংসা করেছিলেন। এবছর প্রসূতি মৃত্যুর হার অনেকটাই কমে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি জটিল অপারেশনও হয়। এক রোগীকে প্রায় ছ’মাস ভর্তি রাখার পর প্রসব করানো হয়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এধরনের অপারেশন প্রথম হয়। সেই অপারেশনের পরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যদপ্তরের বাহবা কুড়ায়। কিন্তু সোমবার রাতের ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছিল। যদিও তারা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এক চিকিৎসক বলেন, অপারেশনের আগে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এতদিন কোনও সমস্যা হয়নি। সোমবার রাতে কোন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল যার জন্য এই ঘটনা ঘটল তা তদন্ত করে দেখা দরকার। তা না হলে পরে আবার এধরনের ঘটনা হতে পারে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর অবশ্য দাবি, দু’জনের প্রকৃতই সমস্যা হয়েছিল। বাকিরা তাঁদের দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদেরকে চিকিৎসকরা আশ্বস্ত করেন। ওই দিন যে চিকিৎসক ওয়ার্ডে ছিলেন তাঁর সঙ্গে কথা বলেই কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যদপ্তরে রিপোর্ট জমা দেবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)