নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়া শহরের উদ্যানগুলি সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়েছে। সেইসব বেহাল উদ্যান রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছে বাঁকুড়া পুরসভা। শীঘ্রই সংস্কারের কাজও শুরু হবে বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এরফলে শহর সৌন্দর্যায়নের কাজে গতি আসবে। এব্যাপারে বাঁকুড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান হীরালাল চট্টরাজ বলেন, শহরের উদ্যানগুলির অবস্থা খারাপ হওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরেও পড়েছে। সেগুলি সংস্কার করা হবে। নিয়মিত যাতে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় সেব্যাপারেও ব্যবস্থা নেব। উদ্যানগুলিতে থাকা পশু-পাখির কংক্রিটের অবয়বগুলিও ভেঙে গিয়েছে। সেগুলিও মেরামত ও রং করা হবে।
উল্লেখ্য, বাঁকুড়া শহরে তেমন কোনও বড় উদ্যান নেই। অন্যান্য জেলা সদরের মতো গাছগাছালি ঘেরা বড় জলাশয় বা প্রাতঃভ্রমণের মতো উন্মুক্ত পরিবেশেরও অভাব রয়েছে। শহরের বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে কলেজের ময়দান অথবা রাস্তায় হাঁটাচলা করে। দীর্ঘদিন ধরেই শহরের ফুটপাত ও রাস্তার দু’পাশ জবরদখলকারীদের কব্জায় চলে যাচ্ছে। বছর সাতেক আগে ওই জবরদখল মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। ওইসময় বাঁকুড়া সদর মহকুমা প্রশাসন ও পুরসভা এব্যাপারে কড়া অবস্থান নেয়। পুলিস মোতায়েন করে মহকুমা প্রশাসন জবরদখল উচ্ছেদ করে। সেই জায়গায় উদ্যান তৈরি করা হয়। তারফলে সরকারি জায়গায় জবরদখলমুক্ত করার পাশাপাশি শহরের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পেয়েছিল। শহরের সার্কিট হাউস মোড়, চাঁদমারিডাঙা সহ অন্যান্য এলাকায় ওই ধরনের উদ্যান রয়েছে। কিন্তু উদাসীনতার কারণে উদ্যানগুলি ফের বেহাল হয়ে পড়েছে। এমনকী, বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা সহ অন্যান্য জায়গায় পুরসভার রেলিং ও তারজালি ঘেরা জায়গা দখল করে অবাধে ব্যবসা চলছে।
সার্কিট হাউস সংলগ্ন উদ্যানটি সবচেয়ে বেশি বেহাল হয়ে পড়েছে। আগাছায় গোটা উদ্যান ভরে গিয়েছে। সেখানে বসার জায়গা, শিশুদের বিনোদনের জন্য তৈরি কাঠামো ভেঙেচুরে গিয়েছে। শেষ কবে উদ্যানের গেট খুলেছে তা স্থানীয়রা মনে করতে পারছেন না। এভাবে চললে মাচানতলার মতো ওই জায়গাও ফের জবরদখলকারীদের দখলে চলে যাবে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। ইতিমধ্যেই সার্কিট হাউসের প্রাচীরের গা ঘেঁষে দোকানপাট গজিয়ে উঠতে শুরু হয়েছে। প্রশাসন ও পুরসভার উদাসীনতার কারণে জবরদখলের প্রবণতা ফের বৃদ্ধি পাবে বলে শহরবাসী আশঙ্কা করছে।
বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, সরকারি জায়গা দখল করার বিষয়টি মেনে নেওয়া হবে না। এব্যাপারে সদর মহকুমা প্রশাসনকে সক্রিয় হতে হবে। তারজন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ আমরা দেব।