• মহকুমার স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন নিয়ে সমীক্ষা শুরু
    বর্তমান | ০৫ মার্চ ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়া সদর ও খাতড়া মহকুমার মধ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার বৈষম্য দূর করতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে সমীক্ষার কাজ শুরু করা হয়েছে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিকরা দুই মহকুমার সার্বিক পরিকাঠামো খতিয়ে দেখছেন। তৃণমূল স্তর থেকে উঠে আসা রিপোর্ট খতিয়ে দেখে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন। এব্যাপারে বাঁকুড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সোরেন বলেন, জনস্বাস্থ্যের মান খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে আমরা জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো খতিয়ে দেখছি। বাঁকুড়া সদরের সঙ্গে খাতড়া মহকুমার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তুলনা করে দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে খাতড়া মহকুমা অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। বাঁকুড়া সদরে সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও ওন্দা, বড়জোড়া ও ছাতনায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল রয়েছে। বেলিয়াতোড়, পাঁচালের মতো এলাকাতেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মান যথেষ্ট ভালো। তবে খাতড়া মহকুমা হাসপাতাল ছাড়া ওই মহকুমায় তেমন কোনও বড় হাসপাতাল নেই। খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে বর্তমানে ১৩৯টি বেড রয়েছে। তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম। বেড সংখ্যা বৃদ্ধি করে অন্তত ২০০টি করার ব্যাপারে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। অন্যান্য পরিকাঠামোগত সমস্যা সমাধানেরও চেষ্টা করা হচ্ছে।


    উল্লেখ্য, বাঁকুড়ায় দু’টি স্বাস্থ্য জেলা রয়েছে। কয়েকবছর আগে বাঁকুড়া থেকে বিষ্ণুপুরকে আলাদা করে একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য জেলা তৈরি করা হয়। বিষ্ণুপুর মহকুমার ব্লকগুলিই মূলত ওই স্বাস্থ্য জেলার আওতায় রয়েছে। বিষ্ণুপুর মহকুমার হাসপাতালগুলির মান অনেকটাই ভালো। পাত্রসায়র, ইন্দাস থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দূরত্ব খুব একটা বেশি নয়। তাছাড়া বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল তো রয়েছেই। ফলে সদর ও বিষ্ণুপুর মহকুমার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে খুব একটা উদ্বেগের কিছু নেই বলেই আধিকারিকরা মনে করেন। তবে খাতড়া মহকুমার অনুন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো আধিকারিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। ওই মহকুমার জঙ্গলমহল একসময় পিছিয়ে পড়া এলাকা বলে চিহ্নিত ছিল। বর্তমান রাজ্য সরকার যোগাযোগ পরিকাঠামোর অনেক উন্নতি করেছে। তবে এখনও মহকুমার স্বাস্থ্য পরিষেবা সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে। সামান্য ঘটনাতেও খাতড়া, রানিবাঁধ, রাইপুর, সারেঙ্গার হাসপাতালগুলি থেকে রোগীদের বাঁকুড়া মেডিক্যালে রেফার করে দেওয়া হয়। অথচ সেখানে পরিকাঠামো উন্নয়ন, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করলে স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকাতেই সুষ্ঠু পরিষেবা পেতে পারবেন। 


    খাতড়ার বাসিন্দা চিন্ময় মণ্ডল, রাইপুরের ধর্মদাস চক্রবর্তী বলেন, তৃণমূল সরকারের আমলে জঙ্গলমহলে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে আমাদের এলাকার বহু মানুষ এখনও দারিদ্রসীমার নীচে বাস করে। তাদের পক্ষে বাঁকুড়া মেডিক্যালে পরিজনদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা চালানোও কষ্টকর। চিকিৎসা খরচের থেকেও যাতায়াত ও থাকা-খাওয়ার জন্য অনেক টাকা ব্যয় হয়ে যায়। অনেকে ধার-দেনা করে প্রিয়জনকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে নিয়ে যান। খাতড়া মহকুমা হাসপাতাল ও রানিবাঁধ, সারেঙ্গা, রাইপুর গ্রামীণ হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়ন করা গেলে আমাদের অনেক উপকার হবে। বিষয়টি সরকার বিবেচনা করলে ভালো হয়।      
  • Link to this news (বর্তমান)