নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: রোগপোকার আক্রমণ, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও ডিভিসির ছাড়া জলে বাঁকুড়া জেলায় আলু চাষে ক্ষতি হয়েছে। অসময়ে বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আলু চাষিদের ভরসা জোগাচ্ছে রাজ্য সরকারের বাংলার ফসল বিমা যোজনা। বাঁকুড়ার ১০০ শতাংশ আলু চাষিকেই বিমার আওতায় আনা গিয়েছে বলে জেলা কৃষিদপ্তর জানিয়েছে। ফলে চাষিরা আলুর ক্ষতিপূরণ পাবেন বলে কৃষিদপ্তরের আধিকারিকদের দাবি। উল্লেখ্য, এর আগে আলু চাষে বিমা হতো না। এবার থেকেই রাজ্য সরকার আলু চাষিদের বিমার প্রিমিয়ামের টাকা মিটিয়ে দিচ্ছে। ফলে তার সুবিধা পেতে আর কোনও সমস্যা হবে না বলেই সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে।
বাঁকুড়ার উপ কৃষি অধিকর্তা দেবকুমার সরকার বলেন, এবার জেলায় ৫৬ হাজার হেক্টরের কিছু বেশি জমিতে আলু চাষ হয়েছে। মোট আড়াই লক্ষ চাষি আলু লাগিয়েছিলেন। জেলার সব চাষিকেই আমরা বাংলার ফসল বিমা যোজনার আওতায় আনতে পেরেছি। ফলে ক্ষতিগ্রস্তরা নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পেয়ে যাবেন।
বড়জোড়ার মানাচর এলাকার আলু চাষি মিলন সরকার বলেন, এবার শুরুর দিকের আবহাওয়া ভালো ছিল। আলু গাছ ভালো হয়েছিল। ফলে বাম্পার ফলনের আশা করেছিলাম। তবে শেষ দিকে কুয়াশা ও আবহাওয়ার খামখেয়ালিতে ধসা লেগে যায়। ঝড়-বৃষ্টিতেও ক্ষয়ক্ষতি হয়। ফসল বিমা যোজনায় ক্ষতিপূরণ পেলে ভালো হয়। তা না হলে বহু চাষি বিপদে পড়বেন।
জেলা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গতবারের তুলনায় এবার উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবার আলু চাষের এলাকাও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর ৫৩ হাজার ২৭৭ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। এবার তা বেড়ে ৫৬ হাজার ৬২৪ হেক্টর হয়েছে। জলদি জাতের পোখরাজ আলু চাষ হয়েছিল ১৬ হাজার ১৭৪ হেক্টর জমিতে। তা ইতিমধ্যেই উঠে গিয়েছে। ৪০ হাজার হেক্টর এলাকায় চাষ হওয়া জ্যোতি আলুও ওঠা শুরু হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত জলদি জাতের পোখরাজ আলু বেশি পরিমাণ বাজারজাত হচ্ছে। বিষ্ণুপুর মহকুমার প্রায় সব ব্লক, খাতড়া মহকুমার তালডাংরা, সারেঙ্গা, সিমলাপাল, রাইপুর এবং সদর মহকুমার বড়জোড়া, ওন্দার কিছু জায়গায় আলুর ভালো ফলন হয়। এবার বাঁকুড়ায় প্রায় ১৬ লক্ষ মেট্রিক টন আলু ফলবে বলে কৃষিদপ্তরের আশা।