বারবার দাবি জানালেও স্থায়ীকরণ হচ্ছে না উত্তর দিনাজপুরের চুক্তিভিত্তিক সিএইচওদের
বর্তমান | ০৫ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: বারবার দাবি জানালেও উত্তর দিনাজপুর জেলার চুক্তিভিত্তিক সিএইচওদের (কমিউনিটি হেলথ অফিসার) স্থায়ীকরণ হচ্ছে না। প্রায় এক বছর ধরে দেওয়া হচ্ছে না প্রাপ্য পিএলই (পারফরমেন্স লিঙ্ক ইনসেন্টিভ)। এক্ষেত্রে নিয়ম মানা হচ্ছে না ন্যাশনাল হেলথ মিশনেরও। একরমই একাধিক অভিযোগ নিয়ে মঙ্গলবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দ্বারস্থ হলেন চুক্তিভিত্তিক সিএইচওরা। লিখিত দাবিপত্র নিয়ে কর্ণজোড়ায় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরের সামনে পোস্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান জেলায় নিযুক্ত সিএইচওদের একাংশ। এব্যাপারে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ কুমার শর্মা বলেন, চুক্তিভিত্তিক সিএইচওদের দাবিপত্র জমা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিবেচনাধীন। এর বেশি কিছু মন্তব্য করব না।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, জেলার চিকিৎসা পরিষেবায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সিএইচওরা। গ্রামগঞ্জে চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নত করতে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে তাঁদের কাজে লাগানো হয়। যাঁরা স্বাস্থ্য কর্মীদেরকে পরিচালনা করেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য পরিষেবা পরিচালনায় তাঁদের ভূমিকা ও দায়িত্ব বর্তমানে যথেষ্ট। জেলায় এমন ২৩৪ জন চুক্তিভিত্তিক সিএইচও কাজ করেন। যাঁরা জেলার বিভিন্ন ব্লকে নিযুক্ত রয়েছেন।
মঙ্গলবার বিক্ষোভরত সিএইচওদের মধ্যে পরিতোষ বর্মন বলেন, আমরা প্রত্যেকেই গত দুই থেকে আড়াই বছর ধরে জেলার বিভিন্ন ব্লকে কর্মরত। কিন্তু আমাদের স্থায়ীকরণের ব্যাপারে স্বাস্থ্যদপ্তর চরম উদাসীন। আমাদের আক্ষেপ, যেসমস্ত নার্সিং স্টাফ বিভাগীয়ভাবে সিএইচও হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন, তাঁরা একই পদে একই কাজ করার জন্য আমাদের থেকে বেশি বেতন ও সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। যা আমরা পাচ্ছি না। অন্যান্য রাজ্যে সিএইচওরা আমাদের থেকে বেশি সুযোগসুবিধা পেয়ে থাকেন। কিছুক্ষেত্রে দ্বিগুণ টাকাও পান। কিন্তু আমরা লাগাতার কাজ করলেও প্রায় এক বছর ধরে আমাদের প্রাপ্য পিএলই বাবদ প্রতি মাসে ৫০০০ টাকা পাচ্ছি না। যে টাকা আমরা তিন মাস অন্তর পেয়ে থাকি। বিক্ষোভরত আরেক সিএইচও পল্লবী সরকারের বক্তব্য, ন্যাশনাল হেলথ মিশনের অধীনে অন্যান্য রাজ্যে সিএইচওদের পেয়িং স্কেল প্রায় দ্বিগুণ। আমাদেরকে যে চুক্তিভিত্তিক হিসেবে কাজ করানো হচ্ছে, সেটা শুধু মাত্র এরাজ্যের ক্ষেত্রেই। অন্যান্য রাজ্যে স্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করানো হচ্ছে। আমাদের বেতন পরিকাঠামো আরও উন্নত করতে হবে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমাদের দাবিপত্র রাজ্যে পাঠাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, দীর্ঘ সময় গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দারা প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। সেই ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে ন্যাশনাল হেলথ মিশনের অধীনে সিএইচওদের নিযুক্ত করা হয়েছে। যাঁরা ডায়াবেটিস, রক্তচাপ এবং অন্যান্য রোগের প্রাথমিক পরীক্ষার বিষয়টি দেখবেন। জেলার চিকিৎসা পরিষেবায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সিএইচওরা। গ্রামেগঞ্জে চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নত করতে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে এদের কাজে লাগানো হয়। যাঁরা স্বাস্থ্য কর্মীদেরকে পরিচালনাও করেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য পরিষেবা পরিচালনায় এদের ভূমিকা ও দায়িত্ব বর্তমানে যথেষ্ট। জেলায় এমন ২৩৪ জন চুক্তিভিত্তিক সিএইচও কাজ করছেন।