• দার্জিলিং জেলার পাহাড়-সমতলে আরও ৮৪টি রেশন দোকান চালু করার উদ্যোগ
    বর্তমান | ০৫ মার্চ ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: গ্রাহকের চাপ অস্বাভাবিক। সপ্তাহের প্রতিদিনই রেশন দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন গ্রাহকরা। তাই দার্জিলিং জেলায় আরও ৮৪টি নতুন রেশন দোকান চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে জেলার সমতলভাগ শিলিগুড়িতেই চালু হবে ৬২টি। রেশন গ্রাহকদের সুবিধার্থে এবং বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর। ইতিমধ্যে তারা এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাবও পাঠিয়েছে। 


    জেলার খাদ্য নিয়ামক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে প্রাথমিক অনুমোদন মিলেছে। এখন দোকানগুলি চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া কার্যকর হওয়ার পর রেশন গ্রাহকদের ব্যাপক সুবিধা হবে। রেশনের খাদ্যসামগ্রী বণ্টনের কাজও সহজ হবে। 


    দার্জিলিং জেলার সমতলভাগ শিলিগুড়িতে রেশন দোকানের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি বহুদিনের। মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি ও ফাঁসিদেওয়ায় কিছু রেশন দোকানে গ্রাহকের সংখ্যা অস্বাভাবিক। সপ্তাহের অধিকাংশ সময় সংশ্লিষ্ট দোকানগুলিতে গ্রাহকের ভিড় উপচে পড়ে। এজন্য দীর্ঘক্ষণ রেশন দোকানের সামনে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে গ্রাহকরা হয়রান হন বলে অভিযোগ। আবার কিছু কিছু গ্রামের বাসিন্দাকে টোটো ও অটোতে চেপে পাশের গ্রামে গিয়ে রেশন তুলতে হয়। বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পাওয়ার পর নড়েচড়ে বসে খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর। তারা পাহাড় ও সমতলে নতুন দোকান চালু করতে তৎপর হয়েছে। 


    খাদ্যদপ্তর সূত্রের খবর, বছর খানেক আগে জেলার চারটি মহকুমায় নতুন করে ১২২টি রেশন দোকান চালুর প্রস্তাব রাজ্যে পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে সেই প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ার পর ৩৮টি দোকান চালু করা হয়েছে। যারমধ্যে দার্জিলিংয়ে ২০টি, শিলিগুড়িতে ১৪টি এবং কার্শিয়াংয়ে চারটি দোকান চালু করা হয়েছে। এবার চালু করা হবে বাকি ৮৪টি দোকান। এরমধ্যে শিলিগুড়িতে ৬২টি, দার্জিলিংয়ে ১৯টি, মিরিকে দু’টি এবং কার্শিয়াংয়ে একটি দোকান চালু করা হবে। 


    খাদ্যদপ্তরের এক আধিকারিক জানান, রাজ্য সরকারের নিয়ম অনুসারে একটি ডিলারের অধীনে গ্রাহকের সংখ্যা সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার জন হওয়ার কথা। কিন্তু পাহাড় ও সমতলে বেশকিছু ডিলারের দোকানে গ্রাহক সংখ্যা পাঁচ হাজারের অধীক। এছাড়া কিছু ডিলারের মৃত্যু হয়েছে। সেই ডিলারের লাইসেন্স আর নবীকরণ করেননি মৃতের পরিবারের সদস্যরা। সেই দোকানের গ্রাহকদেরকে পাশের গ্রামের দোকানের সঙ্গে ট্যাগ করে রেশন বণ্টন করা হচ্ছে। এসব কারণেই নতুন দোকানগুলি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু আবেদনও জমা পড়েছে। সেগুলি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 


    প্রসঙ্গত, বর্তমানে জেলার পাহাড় ও সমতলে রেশন দোকানের সংখ্যা ৬২৭টি। এরমধ্যে শিলিগুড়িতে ১৯২, দার্জিলিংয়ে ২৮৫, কার্শিয়াংয়ে ১১১ এবং মিরিকে ৩৯টি দোকান রয়েছে। সংশ্লিষ্ট দোকানগুলি থেকে রেশন বণ্টন করা হয় ১২ লক্ষ ৮২ হাজার বাসিন্দার মধ্যে। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, নতুন দোকানগুলি চালু হলে জেলায় রেশন দোকানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৭১১টি। এতে বেশকিছু বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)