• পুর হাসপাতালের বদলে নার্সিংহোমে   সিজারের প্রস্তাব, শো-কজের মুখে মহিলা চিকিৎসক
    বর্তমান | ০৫ মার্চ ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: পুরসভা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলার চিকিৎসা করছেন গত প্রায় এক বছর ধরে। অথচ প্রসবের সময় ওই মহিলাকে একটি নার্সিংহোমে সিজার করিয়ে নেওয়ার কথা বলেন ওই চিকিৎসক। ৪০ হাজার টাকা খরচ পড়বে বলেও জানানো হয়। এমনই অভিযোগ ওই মহিলার পরিবারের। দক্ষিণ দমদম পুরসভা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসারের বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগকে কেন্দ্র করে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ওই চিকিৎসককে ইতিমধ্যে শোকজ করেছে পুরসভা। যদিও ওই চিকিৎসক সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।


    দক্ষিণ দমদম পুরসভা হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে মেডিক্যাল অফিসারের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন দীপক দাস। পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মসজিদ গেটের বাসিন্দা বিনোদ চৌধুরী। তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি চৌধুরী সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর পুরসভা হাসপাতালে এসেছিলেন। চৌধুরী দম্পতির দাবি, প্রথম দিন থেকে চিকিৎসক দীপক দাসকেই তাঁরা দেখাচ্ছিলেন। ১৮ জানুয়ারি প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৪ জানুয়ারি রাতে অঞ্জলিদেবী অসুস্থতা বোধ করলে পরের দিন সকালে তাঁকে পুরসভার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, এরপর শুরু হয় নানা টালবাহানা। বিনোদবাবু বলেন, ‘ওই সময় দীপকবাবুকে ফোন করি। উনি বলেন, বাচ্চা উল্টো দিকে রয়েছে। এখানে সিজার করা মারাত্মক ঝুঁকির। একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। সেখানে খরচ পড়বে ৫০ হাজার টাকা। শেষে দরদাম করে ৪০ হাজার টাকা ঠিক হয়। আমি অটো চালিয়ে ভাত খাই। এত টাকাও বা কোথায় পাব? সেখানেই চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করায় অন্য এক চিকিৎসক সিজার করেন।’ অঞ্জলিদেবী বলেন, ‘উনি যদি ডেলিভারি করবেন না, তাহলে আগে বলতে পারতেন।’ এই অভিযোগ পুরসভার নজরে আনেন স্থানীয় কাউন্সিলার ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত। তারপর ওই চিকিৎসককে শোকজ করা হয়। শহরবাসীর অভিযোগ, এই হাসপাতালের মতো পুরসভার মাতৃসদনের পরিষেবাও বেশ খারাপ। প্রভাবশালী এক কাউন্সিলারের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে এক চিকিৎসক প্রায় কোনওদিন হাসপাতালে না এসে বেতন তুলছেন বলে অভিযোগ। 


    চিকিৎসক দীপক দাস বলেন, ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। মনে হয়, আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলে সত্যি প্রকাশ্যে আসবে। শোকজের জবাব দিয়েছি।’ পুরসভার সিআইসি(স্বাস্থ্য)  সঞ্জয় দাস বলেন, ‘ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আগেও এমন অভিযোগ উঠেছিল। আইন অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাতৃসদনের ক্ষেত্রেও কিছু অভিযোগ পেয়েছি। সবটাই খতিয়ে দেখা হবে।’
  • Link to this news (বর্তমান)