বাড়িতে গ্যাসের সংযোগের কথা বলে চাওয়া হচ্ছে আধার সহ একাধিক নথি
বর্তমান | ০৫ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: প্রতারণার আরও এক অভিনব কৌশল সামনে এল বারাকপুরে। বাড়িতে পাইপলাইনের গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার কথা বলে নাগরিকদের আধার কার্ড সহ আরও কিছু নথি চাইছে প্রতারকরা। পুরসভা থেকে তাদের বাড়ি বাড়ি পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করছে। তাদের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে ওই সব নথি কেউ দিয়ে ফেললে অল্প সময়ের মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যেতে পারে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট।
বারাকপুরের কালিয়ানিবাস এলাকায় এই ধরনের ঘটনায় রীতিমতো বাসিন্দাদের শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কীভাবে জানা গেল যে এই কৌশল আসলে প্রতারকদের? স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েকজনের বাড়িতে গিয়ে পাইপলাইনের গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা বলে নথি চাইলে সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয় কাউন্সিলার সম্রাট তপাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পুরসভার এরকম কোনও কর্মসূচির কথা তাঁর জানা ছিল না। তখন তিনি গোটা বিষয়টি জানান বারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাসকে। তিনি বলেন, ‘পুরসভা থেকে এরকম কোনও সার্ভে বা নথি সংগ্রহের কাজ হচ্ছে না। ইতিমধ্যে গ্যাসের পাইপলাইন বসানোর অনুমতি দিয়েছে পুরসভা। সেই কাজই চলছে।’ বিষয়টি বারাকপুরের মহকুমা শাসক সৌরভ বারিকের নজরেও আনা হয়। তারপর পুরসভা এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারাকপুরের বাসিন্দাদের সতর্ক করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কেউ জল বা গ্যাসের কানেকশন দেওয়ার জন্য আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড বা কোনও তথ্য চাইলে দেবেন না। এই ধরনের নথিপত্র কেউ এসে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে ১৯৩০ নম্বরে ফোন করার পরমার্শও দেওয়া হয়েছে নাগরিকদের।
প্রসঙ্গত, পুলিস ও গোয়েন্দাদের নজর এড়াতে সাইবার প্রতারকরা কয়েকদিন অন্তর বদলে ফেলে লোক ঠকানোর কৌশল। কখনও বিদ্যুতের বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করা হচ্ছে। কখনও সিবিআই, ইডির মতো তদন্তকারী সংস্থার ভয় দেখানো হচ্ছে। তবে গ্যাসের পাইপলাইনের সংযোগ দেওয়ার কথা বলে নথি হাতানোর চেষ্টা একেবারেই অভিনব বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সংশ্লিষ্ট ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সম্রাট তপাদার বলেন, ‘পুরসভার পক্ষ থেকে সকলের কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে, কেউ যেন ব্যক্তিগত তথ্য কাউকে শেয়ার না করেন। নতুন প্রতারণা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বারাকপুরে। বিষয়টি পুলিসকেও জানানো হয়েছে।’