• সাফাইয়ের পরও ফের আবর্জনা নদীতে, জোড়াপানি-ফুলেশ্বরী সংস্কারে সমস্যায় পুরসভা
    এই সময় | ০৫ মার্চ ২০২৫
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: নদীর এ–কূল ভাঙে, ও–কূল গড়ে— এমনটাই যে স্বাভাবিক। কিন্তু সেই নদী সংস্কারে নেমে একদিকে যখন তা পরিষ্কার করা হচ্ছে, অন্যদিকে, সেখানেই ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। এমনটা কী মেনে নেওয়া যায়? প্রশ্ন তুলছেন এলাকার নাগরিকরা।

    ফুলেশ্বরী ও জোড়াপানির কমতে থাকা নাব্যতা চিন্তায় ফেলেছিল শিলিগুড়ির পরিবেশ সচেতন মানুষকে। এই দুই নদীকে বাঁচিয়ে তুলতে তৎপর হয়ে ওঠে শিলিগুড়ি পুরসভা। প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে চলছে এই দুই নদীর সংস্কারকাজ। তাদের নাব্যতা ফেরানোর এই প্রাণপন চেষ্টায় শিলিগুড়ি পুরসভাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার।

    কিন্তু নদী সংস্কারের কাজে নেমে প্রচুর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে পুরসভা ও সেচ দপ্তরকে। একদিকে, পুরসভা নদী পরিষ্কার করছে। অন্যদিকে, নদীতে আবর্জনা ফেলে চলেছে একদল মানুষ। আবর্জনার পাশাপাশি মল–মূত্রও সরাসরি মিশছে নদীতে। ফলে উদ্বেগ বেড়েছে পুরকর্তাদের। মঙ্গলবার সকালে শহরের ৩৫, ৩৬, এবং ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের যে সমস্ত এলাকা দিয়ে ফুলেশ্বরী এবং জোড়াপানি বয়ে গিয়েছে সেগুলি পরিদর্শনে যান শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব–সহ একাধিক পুরকর্তা এবং সেচ দপ্তরের আধিকারিক। দেখেন, যেখানে নদীর একেবারে গা ঘেঁষে বাড়ি রয়েছে, সেখানে ঠিকমতো কাজই করতে পারছে না সেচ দপ্তর। পাশাপাশি ওই বাড়িগুলো থেকে প্রতিনিয়ত নোংরা ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

    ওই বাড়িগুলো নদীর ধার থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। এ দিন পরিদর্শনের পরে সেই কাজ আরও দ্রুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেয়রের কথায়, ‘নদীর ধারের বাড়িগুলো সেখান থেকে শীঘ্র সরানো হবে। স্থানীয় কাউন্সিলাররা বিষয়টি দেখছেন।’ অভিযোগ, কোনও কোনও বাড়ির শৌচাগারের পাইপ একেবারে নদীতে সংযোগ করা। এমন প্রায় ১৬০টি বাড়ি চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিনের এই বসতিগুলি সরাতে গেলে সমস্যায় পড়তে হবে, তা জানে পুরসভা। তাই প্রাথমিক ভাবে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার দায়ভার স্থানীয় কাউন্সিলারদের উপরে দেওয়া হয়েছে।

    নদীতে আবর্জনা ফেলা রুখতে জাল দিয়ে ঘেরা হচ্ছে দুই নদীর উপর থাকা ২০টিরও বেশি সেতু। এর পরেও অভিযোগ উঠেছিল, রাতে সেখানে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। সে বিষয়ে নজরদারি চালাতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, বাজারের ব্যবসায়ীরা যাতে নদীতে বর্জ্য না ফেলে সে দিকে নজর দেওয়া হবে। পাশাপাশি শহরজুড়ে চলবে মাইকিং ও লিফলেট বিলি। শিলিগুড়ি পুরসভার এই উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা কিছুদিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।

  • Link to this news (এই সময়)