‘বাংলাদেশের মতো যেন না হয়’, ইন্দ্রানুজ মামলায় সতর্ক করল হাই কোর্ট
প্রতিদিন | ০৫ মার্চ ২০২৫
গোবিন্দ রায়: হাই কোর্টে যাদবপুর কাণ্ডের শুনানিতে উঠল বাংলাদেশ প্রসঙ্গও। পড়শি দেশের ‘নৈরাজ্য’ পরিস্থিতির উদাহরণ টেনে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক করলেন হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। মনে করিয়ে দিলেন, এখানকার পরিস্থিতি যেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মতো যেন না হয়। কড়া হাতে রাশ ধরার পরামর্শ দিলেন বিচারপতি।
যাদবপুর কাণ্ডের নেপথ্যে গোয়েন্দা বিভাগ, পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তাঁর আশঙ্কা, কড়া হাতে মোকাবিলা না করলে রাজ্যের সব প্রান্তেই এই বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই পরিস্থিতি তৈরি হলে সামলানো কঠিন হবে। মনে করিয়ে দিয়েছেন, সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। সতর্ক থাকতে হবে পুলিশকে। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিচারপতি বলেন,”নিরাপত্তা পায় এমন ব্যাক্তির কাছাকাছি যদি বিক্ষোভকারীরা চলে আসেন, সেক্ষেত্রে সমস্যা হবে। পরিস্থিতি যেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মতো না হয়।” তাঁর আরও সংযোজন, “এটা যদি উদাহরণ হয় তাহলে কিন্তু গোটা রাজ্যে এটা ছড়িয়ে পরবে। দু’পক্ষকেই দায়িত্বশীল হতে হবে। মানুষ একবার বিশৃঙ্খল হয়ে পড়লে সামলাতে সময় লাগবে।” সামনেই বিধানসভা ভোট। এমন পরিস্থিতিতে বিশৃঙ্খলা বাড়লে সমস্যা আরও জটিল বলে মত বিচারপতির।
পড়শি রাষ্ট্র বাংলাদেশে নৈরাজ্য তৈরির সলতে পাকিয়েছিল ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই। সাধারণ ছাত্রদের সামনে রেখে কলকাঠি নেড়েছিল জামাতের মতো একাধিক মৌলবাদী, বিচ্ছিন্নতাবাদী, জেহাদি শক্তি। তাদের অঙ্গুলিহেলনেই সে দেশের সরকার বদলেছে। চরম অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। আর জি কর আন্দোলনের সময় থেকেই এ রাজ্যে একটি ট্রেন্ড স্পষ্ট হয়েছে। সরকারি বিরোধী যে কোনও ইস্যুকে ‘খুঁচিয়ে ঘা’ করছে বাম, অতি বাম শক্তিরা। তাদের শত চেষ্টার পরও থিতিয়ে গিয়েছে ‘অভয়া’ আন্দোলন। সরকার-রাজ্য পুলিশের দেখানো পথেই সুবিচার এসেছে। এই আন্দোলনকে হাতিয়ার করে ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে আন্দোলনের নামে গোটা রাজ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা চালাতে চেয়েছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। কিন্তু তা হয়নি। তাই এবার বাম, অতি বাম শক্তিরা যাদবপুরের ঘটনাকে ইস্যু করে ‘নৈরাজ্য’ তৈরির ছক কষছে বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। এই উসকানি যাতে বাংলায় নৈরাজ্য তৈরি না করতে পারে তাই গোয়েন্দা, পুলিশকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিলেন বিচারপতি।
আদালতের আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা বোঝা গেল তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়। তিনি জানান, আদালতের এই পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বেশ কয়েকটি সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভে সমর্থন জানাচ্ছে বাংলাদেশের কয়েকটি সংগঠন। তাদের দাবি ব্রাত্য বসুকে শিক্ষামন্ত্রী পদ থেকে সরাতে হবে। নয়তো ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও করা হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে এই রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলি নৈরাজ্য ছড়াতে চরম ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।