কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। দুই বিধায়কের শপথগ্রহণ নিয়ে নবান্ন বনাম রাজভবন যখন উত্তাপ চরমে উঠেছিল তখন এই মামলা করা হয় উচ্চ ন্যায়ালয়ে। ২০২৪ সালের জুন মাসে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকারের শপথ নিয়ে জট তৈরি হয়েছিল। তখন কিছু কথা বলেছিলেন ওই দুই বিধায়ক এবংমুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ওই মামলায় এবার আইনজীবী বদল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতির আঙিনাতেও।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী হিসাবে কলকাতা হাইকোর্টে নথিভুক্ত ছিল সঞ্জয় বসুর নাম। সেখানে আজ, বুধবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের এজলাসে ফক্স অ্যান্ড মণ্ডল নামের সলিসিটর সংস্থা হলফনামা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে করা রাজ্যপালের ওই মামলায় তারা মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে সওয়াল করবে। তাই আজ নথিপত্র দিয়ে সলিসিটর সংস্থার পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, তাদের নোটিশ না দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট যেন কোনও পদক্ষেপ না করে। এই বড় মাপের সলিসিটর সংস্থাকে সামনে নিয়ে আসায় বেশ চাপে পড়ল রাজভবন বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই বাংলায় দু’টি আসনে বিধানসভা উপনির্বাচন হয়েছিল। ওই দুটি আসন হল— বরাহনগর এবং ভগবানগোলা। ওখান থেকে জেতেন যথাক্রমে তৃণমূল কংগ্রেসের সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকার। শপথ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল তাতে রাজ্যপালের সমালোচনা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রেয়াত হোসেন সরকার এবং কুণাল ঘোষ। ওই চারজনের বিরুদ্ধেই মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল। সূত্রের খবর, রাজভবন পৃথক একটি হলফনামা দেয় আদালতে। আর এই মামলায় আইনজীবী বদলের পথে হাঁটলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকারের আইনজীবী হিসাবে সঞ্জয় বসুকে সরিয়ে দিয়েছে নবান্ন।
শুধু বাংলাতেই নয়, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আইনজীবী হিসাবেও সঞ্জয় বসুকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, এই সরিয়ে দেওয়ার পিছনে এক বিশেষ কারণ আছে। সঞ্জয় বসুর সংস্থার সঙ্গে কোনও এক সংবাদপত্রের যোগ রয়েছে। অর্থাৎ সঞ্জয় বসুর সংস্থা ওই সংবাদপত্রের মালিক। তাই তা নিয়ে একটা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই কারণে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও এই যুক্তি কতটা গ্রহণযোগ্য তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। নতুন সলিসিটর সংস্থা মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে যুক্ত হলেও রাজ্যপালের করা ওই মামলায় সওয়াল করবেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য নিজেই বলেন, ‘আমি মমতাদির হয়ে শুনানিতে অংশ নেব।’