গুণগত মান পরীক্ষায় ডাহা ফেল বহু ওষুধ, কেন আগে পদক্ষেপ নয়? সেন্ট্রাল ড্রাগ রিসার্চ ল্যাবরেটরিকে প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের
প্রতিদিন | ০৬ মার্চ ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একের পর এক ওষুধ পরীক্ষায় ডাহা ফেল। সমস্যা হল এইসব ওষুধের বেশিরভাগই মানুষের শরীরে চলে গিয়েছে। কেন আরও আগে পদক্ষেপ করল না সেন্ট্রাল ড্রাগ রিসার্চ ল্যাবরেটরি, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেন্ট্রাল ড্রাগ রিসার্চ ল্যাবরেটরি মঙ্গলবার ১৪৪ টি ওষুধ, ইঞ্জেকশনের গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাতিল করে। সেই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে আরও ১৩৪ টি ওষুধ, ইঞ্জেকশন এবং স্যালাইনের গুণগত মান সঠিক নয় বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। জানিয়ে দেওয়া হল, বাজারচলতি নামি সংস্থার, নামি ব্র্যান্ডের এই ১৩৪টি ওষুধ, ইঞ্জেকশন এবং স্যালাইনকে ব্যবহারের অযোগ্য বলে ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ বা CDSCO। ঘটনা হল এই ১৩৪টি ওষুধের মধ্যে কলকাতার বিভিন্ন ওষুধের দোকান অথবা উৎপাদক সংস্থার ডাহা ফেল করা ওষুধ রয়েছে ২৩ টি।
গত ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসে বাজার থেকে এই ওষুধগুলি নিজেদের ল্যাবে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যায় সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ। সেই রিপোর্ট ফেব্রুয়ারি মাসে সামনে এনেছে তারা। কেন্দ্রীয় ওষুধ সংস্থার তালিকা অনুযায়ী যেসব ওষুধ ব্যবহারে অযোগ্য বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে:
১. রক্ত জমাট বাধা ঠেকাতে ব্যবহৃত হওয়া ওষুধ ২. হাড়ের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হওয়া ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট ৩. বাতের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হওয়া ইঞ্জেকশন৪. শরীরে আয়রনের ঘাটতি বাড়াতে ব্যবহৃত হওয়া ইঞ্জেকশন৫. অস্ত্রোপচারের সময় ব্যথা কমাতে ব্যবহার হওয়া ইঞ্জেকশন৬. ডায়াবেটিসের ওষুধ৭. ফুসফুসের অসুখে ব্যবহৃত হওয়া এন্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন৮. প্যাকেটজাত খাবার দীর্ঘদিন একই রকম রাখতে ব্যবহৃত হওয়া ওষুধ৯. কাফ সিরাপ১০. চোখের সংক্রমণ, কর্নিয়ার সমস্যায় ব্যবহৃত হওয়া ওষুধ ১১. ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহৃত ওষুধ ১২. সাধারণ স্যালাইন১৩. খিঁচুনি কমাতে ব্যবহৃত ওষুধ ১৪. ভিটামিন বি-র ঘাটতি ঠেকাতে ব্যবহৃত ওষুধ১৫. খাদ্যনালীর সমস্যা সংক্রান্ত চিকিৎসার ওষুধ ১৬. বসন্তের টিকা১৭. ক্ষুদ্রান্তের সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ১৮. ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবী সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহৃত ইঞ্জেকশন১৯. ক্যালসিয়ামেক ইঞ্জেকশন২০. ফোলা কমানোর ইঞ্জেকশন২১. বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ট্যাবলেট
এখন প্রশ্ন এই ওষুধ, ইঞ্জেকশনগুলির সমস্যা কি? কোথাও প্যাকেটের গায়ে নাম লেখা এক, ভেতরে ওষুধ আছে আরেক। কোনও ট্যাবলেট খাবার পর শরীরে গিয়ে দ্রবীভূত হচ্ছে না। শক্তই থেকে যাচ্ছে। কোনটায় যে পরিমাণ ওষুধ আছে বলে দাবি করা হচ্ছে তার মাত্রা কম। কোনও ওষুধ আবার গোটাটাই ভেজাল। কোনও ওষুধ নিম্নমানের। কোনও ওষুধে মিশে রয়েছে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ। কোনওটা আবার সঠিকভাবে পরিশোধন করা তরল দিয়ে বানানো হয়নি। কোনও ট্যাবলেটের গায়ে কালো কালো ছোপ। কোন ও ট্যাবলেট ক্যাপসুলের ল্যামিনেশনের ত্রুটি আছে। কোনও কোনও ওষুধ ড্রাগ কন্ট্রোলের গাইডলাইনের বাইরে গিয়ে বানানো হয়েছে। কোথাও একই স্ট্রিপে থাকা কিছু ট্যাবলেট এক রংয়ের, কিছু ট্যাবলেট আবার অন্য। কোনও কোনও ওষুধ নামী সংস্থার ব্র্যান্ড জাল করে বানানো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইসব ওষুধ যাঁদের দেওয়া হয়েছে তাঁদের শরীরে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতেই পারে। তাই যথেষ্ট উদ্বেগজনক।