ঠাকুরের সামনেই পায়েসে বিষ! মৃত্যু না হওয়ায় ‘প্ল্যান বি’, ট্যাংরা কাণ্ডে প্রকাশ্যে নয়া তথ্য
প্রতিদিন | ০৬ মার্চ ২০২৫
অর্ণব আইচ: ট্যাংরা কাণ্ডের প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ‘প্ল্যান এ’ অনুযায়ী ট্যাংরার দে বাড়ির ছোট ছেলে প্রসূনের স্ত্রী রোমি পায়েস রান্না করেন। ওই পায়েস নিয়ে প্রসূন ও রোমি তিনতলার উপর ঠাকুরঘরে যান। বিগ্রহের সামনেই পায়েসে ওষুধ মেশান প্রসূন। এর পর দু’জন মিলেই ঠাকুরঘরে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বড় ছেলে প্রণয় দের স্ত্রী সুদেষ্ণা তাঁর স্বামী ও ছেলে প্রতীপকে পায়েস খেতে দেন। রোমি দেন তাঁর স্বামী প্রসূন ও মেয়ে প্রিয়ংবদাকে।
জেরার মুখে প্রসূন জানিয়েছেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রথমে তাঁরই ঘুম ভাঙে। তিনি দাদা প্রণয়কে ডাকেন। এর পর রোমি ও সুদেষ্ণাকে ডাকা হয়। ওষুধ মেশানো পায়েস খেয়ে যেহেতু কারও মৃত্যু হয়নি, তাই চারজন একতলায় বসে ‘প্ল্যান বি’নিয়ে মিটিং করেন। প্রথমে ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার কথা ভাবা হয়। দুই স্ত্রী এতে রাজি হননি। তখন ছুরি দিয়ে হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার ছক কষা হয়। আত্মঘাতী হওয়ার ক্ষেত্রে একে অন্যকে সাহায্য করবেন বলে জানান। প্রণয় বলেছিলেন, তিনি একতলার সিঁড়িতে বসেছিলেন। প্রসূনের দাবি, দাদা ছিলেন তিনতলায়। প্রসূনের দাবি, তিনি ও স্ত্রী রোমি মেয়ে প্রিয়ংবদার ঘরে যান। ঘুমন্ত প্রিয়ংবদার নাক ও মুখে বালিশ চেপে ধরেন প্রসূন। মেয়ে ছটফট করে উঠলে রোমি তার পা চেপে ধরেন। শ্বাসরোধের কারণে মৃত্যু হয় কিশোরীর। কারখানার চামড়া কাটা বড় ছুরি দিয়ে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করা হলেও প্রণয় রাজি হননি। তাই প্রসূন কাগজ কাটা ছুরি জোগাড় করেন। এর পর রোমি নিজের ঘরে যান। ওই ছুরি দিয়ে নিজের হাতে রোমি আঘাত করার পরও কিছু হয়নি। তাই রোমির হাতের শিরা কাটেন প্রসূন। যন্ত্রণায় রোমি চিৎকার করে উঠলে তাঁর মুখে প্রসূন বালিশ চাপা দেন। ওই চিৎকার শুনেই প্রণয়ের স্ত্রী সুদেষ্ণা ঘরে চলে আসেন। রক্তাক্ত রোমির দেহ দেখে নির্বাক হয়ে যান।
সুদেষ্ণাকে নিয়ে অন্য ঘরে চলে যান প্রসূন। সুদেষ্ণা নিজের হাত বাড়িয়ে দিলে প্রসূন বলেন, একবার তাঁকে আত্মহত্যার চেষ্টা করতেই হবে। সুদেষ্ণাও রোমির মতো অল্প হাত কাটলে মৃত্যু হয়নি। তাই প্রসূন সুদেষ্ণার হাত কাটেন। দেড় ঘণ্টা পর প্রসূন রক্তমাখা জামা পরে প্রণয়ের সামনে আসেন। এর পর প্রসূন তাঁর নাবালক ভাইপো প্রতীপকেও খুনের চেষ্টা করেন। পুরো কাজের পর তিনতলায় গিয়ে ঘুমের ওষুধ খান প্রসূন। সন্ধ্যার পর ঘুম থেকে ওঠেন। এরপরই তাঁরা গাড়ি করে বাইরে গিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার পরিকল্পনা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।