দেশ ও বিদেশ থেকে ভক্তরা দোলের আগে শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠে আসছেন
বর্তমান | ০৬ মার্চ ২০২৫
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: দোলের আগেই মন্দিরনগরী নবদ্বীপে পৌঁছে গিয়েছেন দেশবিদেশের ভক্তরা। বিভিন্ন এলাকার পুণ্যার্থীদের সমাগমে চৈতন্যভূমিতে এখন উৎসবের আমেজ। ১৪মার্চ শুক্রবার দোল উৎসব তথা গৌরপূর্ণিমা অর্থাৎ শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মতিথি। তার আগে নবদ্বীপের দক্ষিণাঞ্চলে কোলেরডাঙা শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠে(জলমন্দির) নানা জায়গা থেকে ভক্তরা চলে এসেছেন। মঠের ইনচার্জ ভক্তিসুন্দর বৈষ্ণব মহারাজ বলেন, দোলপূর্ণিমা উপলক্ষে দেশের নানা এলাকা থেকে ভক্তরা এসেছেন। প্রায় ৫০জন বিদেশি ভক্তও এসেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই নবদ্বীপ ধাম পরিক্রমা ও মহাপ্রভুর স্মৃতিবিজড়িত নানা স্থান দর্শন করছেন।
৯ মার্চ রবিবার নবদ্বীপ ধাম পরিক্রমার মাধ্যমে শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠে দোল উৎসবের সূচনা হবে। ওইদিন ভোরে এই মন্দির থেকে পরিক্রমা বের হবে। এরাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি দিল্লি, গুজরাত, দক্ষিণ ভারত থেকেও ভক্তরা এসেছেন। বিদেশ থেকেও অনেক ভক্ত এই মন্দিরে আসেন। বিশেষত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভেনেজুয়েলা, মরিশাস, মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সহ নানা দেশ থেকে বহু ভক্ত এই মন্দিরে আসেন। দোল উৎসবের আগে এই মন্দিরে এখন রোজ নিয়ম করে মঙ্গলারতি, মন্দির পরিক্রমা, সকাল ও বিকেলে পাঠকীর্তন শুরু হয়ে গিয়েছে। ১৪মার্চ দোল উৎসবে বহু ভক্ত সারাদিন উপবাস থেকে মহাপ্রভুর সেবা ও পুজোয় অংশ নেবেন। ওইদিন ভোর থেকে মন্দিরে নামসংকীর্তন ও দোলের বিশেষ কীর্তন হবে। মরিশাস থেকে শ্রীচৈতন্য সারস্বত মঠে এসেছেন পারো বিদ্যানন দাস ও তাঁর স্ত্রী গীতাময়ী দেবদাসী। পারো বিদ্যানন বলেন, ১৯৯৬সালে এই মন্দিরের তৎকালীন গুরু মহারাজ গোবিন্দ দেবগোস্বামী মরিশাসে গিয়েছিলেন। সেসময় আমি ও আমার পরিবার মহারাজের কাছে দীক্ষা নিয়েছিলাম। গৌরপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে প্রতিবছরই এই মন্দিরের অনুষ্ঠানে আসি। এখানে এসে কীর্তন শুনি। জলমন্দিরে গৌরপূর্ণিমার উৎসব দেখতে অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছেন এলিজাবেথ রস। দীক্ষার পর তাঁর নাম ইন্দুমতি দাসী। তিনি বলেন, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর আবির্ভাব তিথির উৎসব দেখতে প্রতিবছর এখানে চলে আসি। ২১বছর ধরে এখানে আসছি।
মন্দিরের তরফে জানানো হয়েছে, দোলপূর্ণিমার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অভিষেক হবে। তারপর ভোগ-আরতি, ভক্তদের মধ্যে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হবে। দোলের সকালে ভক্তরা গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর চরণ আবিরে রাঙিয়ে দেবেন। এখানে কোনও রংখেলা হয় না। ভজন, সাধন, কীর্তন হয়। তবে ভক্তরা গোবিন্দের চরণে আবির দেওয়ার পর একে অপরের কপালে আবিরের ছোঁয়া দিয়ে দেন।