নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: আচমকা আলুর মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলায় বীরভূম জেলা প্রশাসন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। মূল্যবৃদ্ধির সময় ন্যায্য দামে আলু বিক্রির লক্ষ্যে জেলায় জ্যোতি আলু মজুতের প্রক্রিয়া শুরু হল। জেলা কৃষি বিপণন দপ্তরের অধীন সুফল বাংলার তরফে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনা হচ্ছে। ছোট ও প্রান্তিক চাষিদের থেকে ওই আলু কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চাষিরা কেজি প্রতি ১০টাকা করে দাম পাবেন। জেলাজুড়ে প্রায় ২০০মেট্রিক টন আলু কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক দিনে সেই আলু কেনা হবে। চাষিদের থেকে কেনা ওই আলু জেলার পৃথক দু’টি সমবায় হিমঘরে মজুত করা হবে। প্রয়োজন অনুসারে সেসব সুফল বাংলার স্টলগুলি থেকে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করা হবে।
দপ্তরের আধিকারিকরা জানান, সুফল বাংলার মাধ্যমে নির্দিষ্ট দরে আলু কেনার ফলে ছোট ও প্রান্তিক চাষিরা উপকৃত হবেন। তাঁদের অভাবী বিক্রির মুখে পড়তে হবে না। সেইসঙ্গে চাষিদের কাছ থেকে কেনা ওই আলু মূল্যবৃদ্ধির সময় ন্যায্য দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে। ফলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।
প্রতি বছরই সেপ্টেম্বর, অক্টোবর মাস নাগাদ বাজারে আলুর দাম বেড়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে টাস্ক ফোর্স পথে নামে। সেইসঙ্গে আমজনতাকে স্বস্তি দিতে রাজ্যের তরফে সুফল বাংলার স্টলের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে আলু বিক্রি করা হয়। মঙ্গলবার থেকে সেই আলু মজুতের কাজ শুরু হয়েছে। জেলার বোলপুর ও রামপুরহাট মহকুমা এলাকায় সেই কাজ চলবে। বোলপুর উত্তর অজয় কৃষক সমবায় হিমঘর ও নলহাটি সিএডিপি সমবায় হিমঘর চত্বরে ক্যাম্প করে সুফল বাংলার তরফে আলু কেনা হবে। এছাড়াও চাষিদের দাবি অনুসারে প্রত্যন্ত এলাকায় অস্থায়ী শিবির করেও আলু কেনা হবে। এক্ষেত্রে কেজি প্রতি চাষিদের ১০টাকা করে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে শুরুতেই ৭০ কুইন্টাল আলু কেনা হয়েছে।
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে আলু কেনা শুরু হবে। আশা করা হচ্ছে, মার্চ মাসের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে। ১০টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করে খুশি কার্তিক মেটে। আলু চাষিরা জানান, এবার আলুর ফলন কিছুটা ভালো হয়েছে। প্রথমদিনে পোখরাজ আলুর দাম কিছুটা কমে গিয়েছিল। তবে সরকার কিনতে শুরু করায় এবার ভালো দাম পাব বলে আশা করছি।
জেলা কৃষি বিপণন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুর উত্তর অজয় কৃষক সমবায় হিমঘর ও নলহাটি সিএডিপি সমবায় হিমঘরে ১০০মেট্রিক টন করে আলু রাখার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার ছোট ও প্রান্তিক চাষিদের উৎসাহিত করার কাজও শুরু হয়েছে। চাষিরা জানান, এতে অভাবী বিক্রি কিছুটা বন্ধ হবে। চাষ করে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না।