• টুকলির কাগজ নিয়ে ঢুকতে বাধা, মার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের
    বর্তমান | ০৬ মার্চ ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, কালিয়াচক: পরীক্ষাকেন্দ্রে টুকলির কাগজ নিয়ে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় ব্যাপক তুলকালাম। শিক্ষক, শিক্ষিকাদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করার অভিযোগ পর্যন্ত উঠল পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। বুধবার ইংরেজি পরীক্ষা শুরুর আগে ঘটনাটি ঘটে মালদহের বৈষ্ণবনগরের চামাগ্রাম হাইস্কুলে। অস্বস্তিকর ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছেন উচ্চ মাধ্যমিক সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। স্কুল সূত্রে খবর, ছাত্রদের হামলায় জখম হয়েছেন দুই শিক্ষিকা এবং চার শিক্ষক। তাঁদের মধ্যে দু’জনের আঘাত গুরুতর। অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংসদ সভাপতি।  স্কুল সূত্রে খবর, বুধবার চামাগ্রাম হাইস্কুলে পড়ুয়াদের হামলার ঘটনার সঙ্গে কয়েকজন অভিভাবকও যুক্ত ছিলেন। পরীক্ষার প্রথম দিন, অর্থাৎ গত সোমবার ছাত্রছাত্রীদের তল্লাশি নেওয়ার পরও দেখা যায় অনেকে টুকলির কাগজ নিয়ে দিব্যি ঢুকে গিয়েছে। এরপরই স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় পরবর্তী পরীক্ষাগুলিতে তল্লাশি আরও জোরদার করা হবে। বুধবার সেইমতো স্কুলে ঢোকার আগেই তল্লাশি শুরু হয়। সেই সময়ই বেশকিছু ছাত্রছাত্রী তল্লাশিতে বাধা দিয়ে বাগবিতণ্ডা শুরু করে। শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের উপর চড়াও হয়। দেখাদেখি কিছু ছাত্রছাত্রী তল্লাশি নেওয়ার দায়িত্বে থাকা শিক্ষক, শিক্ষিকাদের ওপর হামলাও চালায় বলে অভিযোগ। অভিভাবকদের একাংশ এগিয়ে গিয়ে ছেলেমেয়েদের টুকলির কাগজ সঙ্গে নিয়েই পরীক্ষাকেন্দ্রে জোর করে ঢোকানোর চেষ্টা করেন। 


    চামাগ্রাম হাইস্কুলে সিট পড়েছিল ক্যামদিটোলা হাই মাদ্রাসা, পারলালপুর ও চরসুজাপুর হাইস্কুলের পড়ুয়াদের। কারা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, খোঁজ শুরু হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শক্তিপদ সরকার বলেন, পরীক্ষার প্রথম দিনেই ছাত্রছাত্রীদের একাংশ গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করেছিল। সেদিন বিভিন্ন কারণে তারা সফল হয়নি। এদিন পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় দল বেঁধে টুকলির সামগ্রী নিয়ে ভিতরে যাওয়ার চেষ্টায় ছিল পড়ুয়ারা। বাধা পেতেই গণ্ডগোল বাধায় পরীক্ষার্থীরা। পরে মারধর করা হয় শিক্ষক, শিক্ষিকাদের। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তল্লাশির সময় আপত্তিকর কথা বলেছিলেন শিক্ষক, শিক্ষিকারা। তল্লাশির নামে পড়ুয়াদের খারাপভাবে স্পর্শও করা হয়। এরই প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তাঁরা। মারধরের ঘটনার পরেই এলাকায় আসেন কালিয়াচক ৩ এর বিডিও সুকান্ত শিকদার ও বৈষ্ণবনগর থানার আইসি বিপ্লব হালদার। বিডিও জানিয়েছেন, আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


    ঘটনাচক্রে এদিনই মালদহের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন সংসদ সভাপতি। তাঁর সফরের মধ্যেই এই ঘটনায় অস্বস্তিতে জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে শিক্ষা দপ্তর। সংসদ সভাপতি বলেন, অনভিপ্রেত ঘটনা। রাজ্যের ২ হাজার ৮৯টি পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে একটিতেই এমন ঘটনা ঘটল। বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। ছ’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা এই ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পেয়েছি। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)