নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের বৈঠকে আগেই প্রস্তাব জমা পড়েছিল। আর বুধবার পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে সেই প্রস্তাবে সিলমোহর পড়ল। তহবিল ভরাতে নিলামে উঠছে জলপাইগুড়ির পুরসভার একাধিক সম্পত্তি! এদিন সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত চলা বোর্ড মিটিং শেষে পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল বলেন, দিনবাজারে মার্কেট কমপ্লেক্সের দোকানঘর সহ মাসকলাইবাড়ি ও পান্ডাপাড়া বউবাজারে পুরসভার যেসব দোকানঘর রয়েছে, সেগুলি শীঘ্রই নিলামে তোলা হবে। পুরসভার কোষাগার তলানিতে ঠেকার কারণেই যে এই সিদ্ধান্ত তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। পুরসভা সূত্রে খবর, কর্মীদের পিএফ বাবদ প্রায় চার কোটি টাকা বকেয়া। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ফি মাসে পেনশন দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এসবের জেরেই পুর সম্পত্তি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত।
ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, দিনবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য মার্কেট কমপ্লেক্সে এক টাকায় দোকানঘর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের দোকান দেওয়ার পরও পাঁচতলা ওই মার্কেট কমপ্লেক্সে অনেক ঘর পড়ে রয়েছে। সেগুলি নিলামে তোলা হবে। তবে পুরসভার কোনও সম্পত্তি পুরোপুরি বিক্রি করা হচ্ছে না। দীর্ঘদিনের জন্য লিজে দেওয়া হবে। একইভাবে পুরসভার তহবিল ভরাতে বকেয়া সম্পত্তিকর আদায়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। শুধুমাত্র সরকারি দপ্তরগুলির কাছে পুরসভার ১২ কোটি টাকা সম্পত্তিকর বকেয়া। তা আদায়ে প্রতিটি দপ্তরকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, লাগাতার চাপের মুখে এদিনের বোর্ড মিটিংয়ে সাফাই ও জল সরবরাহ বিভাগের চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মীদের বেতন ৬০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া টাকা পাওয়ার পরও যেসব উপভোক্তা হাউজিং ফর অলের বাড়ি তৈরি করেননি কিংবা বাড়ি তৈরিতে গড়িমসি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এবার আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে এদিনের বোর্ড মিটিংয়ে। ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আমরা হাউজিং ফর অল প্রকল্পে প্রায় ৯ কোটির মতো টাকা দিয়েছি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, শহরের ২৫টি ওয়ার্ডে দেড়শোর মতো উপভোক্তা রয়েছেন, যাঁরা টাকা পাওয়ার পরও আবাসের ঘর তৈরি করেননি কিংবা কিছুটা কাজ করে ফেলে রেখেছেন। এর আগে তাঁদের নোটিস ধরানো হয়েছে। এবার ওইসব উপভোক্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বোর্ড মিটিংয়ে। নিজস্ব চিত্র।